শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলিতে কোনো সমস্যা নেই। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে আজ বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক এক সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
এনটিআরসিএর শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এনটিআরসিএর প্রক্রিয়া নিয়ে উচ্চ আদালত থেকে একটি সুনির্দিষ্ট রায় আছে। সেই রায়ের আলোকে সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সুপারিশের আদেশ আহ্বান করা হয়। সেভাবে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি মৌলিক আইনি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সেটা হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাধীন। তারা সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত কিংবা নিয়োগ দেওয়া শিক্ষক নয়। প্রতিষ্ঠানে এনটিআরসিএ সুপারিশ করে, সেই সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান তাঁদের নিয়োগ দেয়। এ ছাড়া সরকার কিন্তু নিয়োগদাতা নয়। যিনি নিয়োগদাতা নন, তিনি কীভাবে একজন শিক্ষককে বদলি করতে পারেন।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সরকার যেহেতু নিয়োগ দিচ্ছে না, সেহেতু সরকারের পক্ষে তাঁদের বদলি করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। একটা বিষয় প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে, পারস্পরিক বদলি। যদি সরকার সরাসরি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকত বা সরকারের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক হতেন তাঁরা, তাহলে বদলিটা সরকার করতে পারত।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এখন নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সময় ইনডেস্কধারী শিক্ষকেরা কতটুকু সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, সেটা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। যেহেতু আদালতের একটি রায় আছে। আর বদলির আলোচনাটা কাঠামোগত আরও চ্যালেঞ্জের হতে পারে। যখন একজন শিক্ষক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন “আমি একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করব”। তিনি নিজেই সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখন তিনি বলছেন সেটা তাঁর বাড়ি থেকে অনেক দূরে। তিনি তাহলে কেন সেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন—প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, এখন যদি বলেন আমরা নিরুপায় হয়ে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটা অ্যাকোমোডেট করা, সরকারের পক্ষে, এনটিআরসিএর পক্ষে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কতটুকু করা সম্ভব, সেটা ভেবে দেখতে হবে। আর সার্বিকভাবে সব পর্যায়ে বদলি কতটুকু করা যাবে, সেটা কাঠামোগত সংস্কার না হলে সম্ভব নয়।’
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে, প্রান্তিক পর্যায়ে মৌলিক বিষয়ে শিক্ষক থাকা নিশ্চিত করতে হবে। সব শিক্ষকই যদি শহরমুখী হয়ে যান, তাহলে গ্রামপর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে মৌলিক বিষয়ের শিক্ষক আমরা পাব না।’ তিনি বলেন, ‘কারও ঠিকানা পঞ্চগড়ে, তিনি আবেদন করেছেন কিংবা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন বরগুনায়, তাঁর জন্য যদি এটা অর্থবহ না হয়, তাহলে এটা ছেড়ে দিয়ে নতুন একটায় আবার আসতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। কিন্তু যেহেতু আদালতের একটি রায় আছে, সেটা মেনেই নিয়োগ ও সুপারিশ করতে হচ্ছে, সেটা মাথায় রেখেই এটা করতে হবে।’