এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম ইস্যুতে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
গতকালও কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষোভ জানাতে রাস্তায় নেমেছেন, এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এই মুহূর্তে সেই পরিস্থিতি তো নেই। আর আপনারা যেমনটি বলছেন, কয়েকজন নেমেছে। কয়জন নেমেছে বা কী হয়েছে, সে ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমাদের কাছে তথ্য নেই। তথ্য পেলে আমরা জানাতে পারব।’
প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি এখন কোনো মন্তব্য করব না। মন্ত্রিসভায় কী আলোচনা হয়েছে, সেটি নিয়ে বাইরে আলোচনা করা যায় না।’
বৈঠকে সরকারপক্ষে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান ও সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা। অন্যদিকে শিক্ষকনেতাদের পক্ষে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম, মহাসচিব নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো এবং শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে (জ্যেষ্ঠ সচিবদের মতো বেতনকাঠামো) অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সারা দেশে ১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। দেশে বর্তমানে ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম রয়েছে। তবে কর্মবিরতি চলছে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এর আগে দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শিক্ষকেরা। ওই বৈঠকের পর সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় কর্মসূচির বাস্তবায়ন এক বছর পেছানোর কথা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। বলা হয়, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর হবে। তবে শিক্ষকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশ্য কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলন ঘিরে ১৭ জুলাই থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় সোমবার বিকেলে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষকনেতারা।