ভারতে বই একতরফা বদল, অব্যাহতি চাইলেন ৩৩ শিক্ষাবিদ

ভারতে বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকের ৩৩ জন লেখক এনসিইআরটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন
ছবি: সংগৃহীত

ভারতে শিক্ষাব্যবস্থায় গত কয়েক মাসে দেশটির ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) নির্দেশনা মেনে বদল হয়েছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম। এতে বাদ পড়েছে মোগল যুগের ইতিহাস, ডারউইনের বিবর্তনবাদ, নারী আন্দোলনের ইতিহাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ নানা অধ্যায়। এ অবস্থায় এনসিইআরটি-এর একচেটিয়া কর্তৃত্বের বিরোধিতা করেছেন অনুমোদিত বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকের ৩৩ জন লেখক। তাঁরা এনসিইআরটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ৩৩ জন শিক্ষাবিদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন থেকে তাঁদের নাম বাদ দিতে বলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) সাবেক অধ্যাপক কান্তি প্রসাদ বাজপাই (তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভাইস ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন), অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রতাপ ভানু মেহতা, সাবেক জেএনইউ অধ্যাপক নিবেদিতা মেনন, হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক কেসি সুরি (এখন গীতম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান) এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের সাবেক পরিচালক পিটার রোনাল্ড ডি সুজা।

নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে এনসিইআরটির পরিচালক দিনেশ প্রসাদ সাকলানিকে চিঠি লিখেছেন ওই ৩৩ শিক্ষাবিদ। এই ৩৩ শিক্ষাবিদ ‘পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন কমিটি’র (টিডিসি) সদস্য। চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, ‘শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এনসিইআরটি একতরফাভাবে পাঠ্যপুস্তকগুলোর পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনছে। এই বইগুলো যে আমাদের সম্মিলিত সৃজনশীল প্রচেষ্টার ফল, এখন তা দাবি করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’ বিষয়টি উদ্বেগের বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদেরা। এ অবস্থায় ‘পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন কমিটি’ (টিডিসি) থেকে তাঁদের বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন শিক্ষাবিদেরা। ৩৩ শিক্ষাবিদের মধ্যে আছেন ২০০৫-০৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকগুলোর প্রধান উপদেষ্টা যোগেন্দ্র যাদব ও সুহাস পালসিকরও।

এনসিইআরটির নির্দেশনা মেনেই বিভিন্ন শ্রেণির পাঠক্রমে পরিবর্তন আনা রুটিন কাজ বলেই দাবি করেছে ভারত সরকার। এই সঙ্গে তাঁদের যুক্তি এতে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ার চাপ কমাবে। তবে বিরোধী দলগুলো বলছে, বিজেপি সংকীর্ণ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসে পরিবর্তন আনছে। শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে চাপ কমানো আসলে ছদ্ম যুক্তি। শিক্ষায় গেরুয়াকরণের পথেই এগোচ্ছে মোদি সরকার।