আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৯০ কোটি টাকা৷ ফলে ঘাটতি থাকবে ৫০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
গতকাল বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ৷ ৯৪৫ কোটি টাকার বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ কোটি টাকা৷ গত বছর এই বরাদ্দ ছিল ১৫ কোটি টাকা। এর সঙ্গে এবার উদ্ভাবনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে৷ সেই হিসাবে গবেষণা-উদ্ভাবন মিলিয়ে বরাদ্দ বাজেটের ২ দশমিক ১২ শতাংশ৷
প্রস্তাবিত বাজেটের ৬৭ শতাংশই (৬৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা) ব্যয় হবে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও পেনশনে। এ ছাড়া পণ্য ও সেবা–সহায়তা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ (২২০ কোটি ৫৫ লাখ ৫ হাজার টাকা)৷
বাজেট উপস্থাপনের সময় ইউজিসির বরাদ্দকে অপর্যাপ্ত বলেছেন কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘এবার ইউজিসির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা ছিল ১ হাজার ১৩১ কোটি ১৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা; কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ আমাদের চাহিদার চেয়ে ৩২৬ কোটি ৭৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা কম বরাদ্দ করা হয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের চেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে, টিউশন ফি–ও বাড়ানো হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ ইউজিসি তার অনুদান যথাযথভাবে বৃদ্ধি করছে না৷ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে তুলনা করলে এই যৎসামান্য বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির চেয়েও কম৷’
বাজেট–ঘাটতির বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান না। তাই নিজস্ব তহবিল থেকে ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না৷ প্রতিবছর এভাবে তহবিলের ঘাটতি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের নতুন নতুন খাত খুঁজে বের করতে হবে অথবা সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুদান চাওয়া যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়াতে একটি প্রস্তাব দেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ৷ তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষায় ভর্তুকির সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত নয়। সমাজের বিত্তবানেরা তাঁদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তিসংগত ব্যয় বহন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়বে, যা থেকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করা গেলে সরকারের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমে কমবে৷