এর আগে কেরালা ও উত্তরাখন্ডে ব্যাগ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের স্কুলে পড়াশোনা করানোর উদ্যোগ নিয়েছে
এর আগে কেরালা ও উত্তরাখন্ডে ব্যাগ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের স্কুলে পড়াশোনা করানোর উদ্যোগ নিয়েছে

ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাগবিহীন দিবসের প্রস্তুতি, যেভাবে বাস্তবায়ন

শিক্ষার্থীদের চাপমুক্ত রাখতে ও বোঝা কমাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত। স্কুলশিক্ষাকে আরও আনন্দদায়ক করতে নতুন ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কয়েক দিনের জন্য দেশের সব স্কুলের শিক্ষার্থীদের ব্যাগের বোঝা কমবে। এ জন্য নতুন প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) একটি ইউনিট সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ভোকেশনাল এডুকেশন (পিএসএই) ‘ব্যাগলেস ডে’ বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছিল। তবে ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যাগবিহীন দিবস বাস্তবায়নে এনসিইআরটির নির্দেশিকাগুলো পর্যালোচনা করে বলেছে, কিছু বিষয়ে আরও সংশোধন প্রয়োজন। তবে স্কুলগুলোতে ব্যাগবিহীন দিবস বাস্তবায়নের নির্দেশিকা পর্যালোচনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ভারতের সরকার কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের ব্যাগ থেকে মুক্ত করতে বড় প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে।

এর আগে কেরালা ও উত্তরাখন্ড পরীক্ষামূলকভাবে মাসের কয়েকটা দিন ব্যাগ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের স্কুলে পড়াশোনা করানোর উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্যাগের ওজন কমাতে অভিনব পরিকল্পনায় সায় দিচ্ছেন অনেকেই।

১০ দিনের জন্য ব্যাগ থেকে স্বস্তি পাবেন শিক্ষার্থীরা

ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে ১০ দিনের জন্য ব্যাগ থেকে স্বস্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল ভারতের জাতীয় শিক্ষানীতি (নেপ)। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় দক্ষতা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইন্টার্নশিপ করবে এবং প্রথাগত স্কুলের নিয়মের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যকলাপে যুক্ত হবে। সুপারিশনীতিতে আরও বলা হয়েছে, এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের তাদের স্কুলের অন্তর্গত বাস্তুতন্ত্র উপলব্ধি তৈরি করতে সহায়তা করা।

ব্যাগবিহীন দিবস চালু হলে কী সুবিধা

এক কর্মকর্তা বলেছেন, ব্যাগবিহীন দিনগুলো সারা বছর চালু থাকবে, যার মধ্যে শিল্প, কুইজ, খেলাধুলা এবং দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার মতো বিভিন্ন কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শিক্ষার্থী সময়–সময় শ্রেণিকক্ষের বাইরে নানা ক্রীয়াকলাপের সঙ্গে যুক্ত হবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও পর্যটন স্থান পরিদর্শন, স্থানীয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে আলাপচারিতা, নানা সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ। শিক্ষার্থীদের গ্রাম, জেলা বা রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনও করানো হবে।

এ ছাড়া ব্যাগবিহীন দিনে শিক্ষার্থীদের জন্য সবজিবাজার পরিদর্শন এবং জরিপকাজ পরিচালনা করা, পোষা প্রাণীর যত্নের ওপর জরিপ ও প্রতিবেদন লেখা, ডুডলিং, কিছু তৈরি করা, ঘুড়ি উড়ানো, বইমেলা আয়োজন, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট ও সৌরশক্তি পার্ক পরিদর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জোর দেওয়ার সুপারিশ করেছিল এনসিইআরটি।

এনসিইআরটির এসব নীতি নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসেছিল ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বৈঠকে শিক্ষার্থীদের স্থানীয় পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করা, পানির বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করতে শেখানো, তাদের স্থানীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বীকৃতি এবং স্থানীয় স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনা শেষে মন্ত্রণালয় বলেছে, এ নির্দেশিকা পরিমার্জিত করতে হবে আরও সুন্দর করে তুলতে হবে।