সুনন্দা বৈদ্য (বাঁয়ে) ও তাহসিনা ফারাহ সনম (ডানে)
সুনন্দা বৈদ্য (বাঁয়ে) ও তাহসিনা ফারাহ সনম (ডানে)

দুই বাংলাদেশি নারী পেলেন সম্মানজনক ওডব্লিউএসডি ফেলোশিপ

অর্গানাইজেশন ফর ওমেন ইন সায়েন্স ফর দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ডের (ওডব্লিউএসডি) সম্মানজনক ‘আরলি ক্যারিয়ার ফেলোশিপ ২০২৩’ পেয়েছেন দুই বাংলাদেশি।

দুই বাংলাদেশি হলেন সুনন্দা বৈদ্য ও তাহসিনা ফারাহ সনম। সুনন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তাহসিনা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্রোপিয়েট টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক।

 সুনন্দা ও তাহসিনা ছাড়াও উন্নয়নশীল ১৫টি দেশের ২৬ নারী বিজ্ঞানী এবার এ ফেলোশিপ পেয়েছেন। তিন বছর মেয়াদের এই ফেলোশিপের আওতায় পৃথক গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক ফেলো সর্বোচ্চ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার করে পাবেন। ফেলোশিপের অর্থায়ন করছে কানাডার ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি)।

সুনন্দা জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। তাঁর পিএইচডির বিষয় ইমিউনোলজি বা রোগ প্রতিরোধবিদ্যা। বিশেষ করে সংক্রমণ ও ক্যানসারের বিরুদ্ধে সহজাত প্রতিরোধ।

ওডব্লিউএসডি ফেলোশিপের অধীন সুনন্দা বাংলাদেশে হেড অ্যান্ড নেক স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা (মাথা-ঘাড়ের টিস্যু ও অঙ্গে বিকশিত ক্যানসার) প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করবেন। বিশেষ করে এই ধরনের ক্যানসারে টিএলআর ৪ (প্রোটিন)-এর ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করবেন তিনি।

সুনন্দা প্রথম আলোকে বলেন, সম্মানজনক এই ফেলোশিপ পাওয়ায় তিনি আনন্দিত। তাঁর গবেষণা প্রকল্পের মধ্য দিয়ে একটি রহস্য উন্মোচনের আশা করছেন তিনি। এই গবেষণা সফলভাবে সম্পন্ন হলে তা রোগনির্ণয় ও প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। গবেষণার তথ্য স্বাস্থ্যনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে সুফল পাওয়া যাবে।

তাহসিনা যুক্তরাষ্ট্রের রাটগারস ইউনিভার্সিটি থেকে মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স—এআই) ওপর পিএইচডি করেছেন। এই ফেলোশিপের আওতায় তিনি বাংলাদেশি শিশুদের অটিজম শনাক্তকরণের পাশাপাশি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই শিশুদের যোগাযোগ আরও সহজতর করতে এআই ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কাজ করবেন।

তাহসিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে মৌলিক গবেষণায় বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এই ফেলোশিপের মাধ্যমে আমার গবেষণা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। গবেষণা প্রকল্পটি সফল হলে বাংলাদেশে সহজে শিশুদের অটিজম শনাক্ত করা যাবে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জন্য একটি বিকল্প যোগাযোগব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হবে, যা তাদের অনুভূতি প্রকাশসহ যোগাযোগকে আরও সহজ করবে। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’

ওডব্লিউএসডি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। সংস্থাটি ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর একটি প্রোগ্রাম ইউনিট ওডব্লিউএসডি। এই সংস্থার সদর দপ্তর ইতালিতে অবস্থিত।

ওডব্লিউএসডির ফেলোশিপটির উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক দক্ষিণে (গ্লোবাল সাউথ) আন্তর্জাতিক মানের গবেষক ও গবেষণাকেন্দ্র গড়ে তোলা। ফেলোশিপের আওতায় অর্থ ছাড়াও ফেলোরা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবেন, যা তাঁদের নেতৃত্ব, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা ও যোগাযোগের সক্ষমতাকে সমৃদ্ধ করবে।