কানাডায় ফল সেশনে পড়তে আসার প্রস্তুতি, বিমানযাত্রা: পর্ব-১

কানাডাজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুরু হয়ে গিয়েছে গ্রীষ্মের (সামার) ছুটি। ২–১টি সামার কোর্স ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হবে ‘ব্যাক টু স্কুল’ উৎসব। শিক্ষার্থীরা আবার পড়াশোনা শুরু করবেন। ফল সেশনে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা কানাডায় পড়তে আসবেন। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা পড়তে আসবেন, তাঁদের আসার প্রস্তুতি কেমন হবে, তা নিয়েই এ লেখা। আজ থাকছে বিমানযাত্রা নিয়ে।

এখন ঢাকা-টরন্টো রুটে সরাসরি বাংলাদেশ বিমান চলছে। শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত বাংলাদেশ বিমান। কারণ, এ উড়োজাহাজ সরাসরি ঢাকা থেকে টরন্টোতে আসে। অন্য কোনো বিমান সরাসরি আসে না। অন্য বিমানগুলোর (এমিরেটস-কাতার এয়ার) কমপক্ষে একটি করে ট্রানজিট থাকে। ফলে অন্য একটি বিমানবন্দরে নামতে হয়, যা অনেকের জন্য একটু ঝামেলার। আবার যাঁরা টরন্টোর বাইরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসবেন, তাঁদের কমপক্ষে ৩টি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হয়। তাই যত কম বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হয়, ততই ভালো।

যদি বাংলাদেশ বিমানের টিকিট না পাওয়া যায়, তাহলে অন্য বিমানে এলে মাঝখানের ট্রানজিটগুলোর যাত্রাবিরতি কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা হওয়া ভালো। যাত্রাবিরতি কম হলে কানেকটিং ফ্লাইট মিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া কানাডায় প্রথম নামার পর ইমিগ্রেশন হয়, তাই সেখানে একটু সময় লাগতে পারে।

বিমানবন্দরগুলোতে খাবারের দাম কয়েক গুণ বেশি, তাই চেষ্টা করবেন বিমানেই খাবার খেয়ে নিতে। বিমান থেকে নামার আগেই অতিরিক্ত কিছু স্ন্যাকস ও পানি চেয়ে নিতে ভুলবেন না। এই অতিরিক্ত স্ন্যাকস ও পানি আপনার অনেক টাকা বাঁচাবে। কানাডায় এসে আপনাকে যদি ডোমেস্টিক প্লেন ব্যবহার করতে হয়, তাহলে মনে রাখতে হবে, ওই প্লেনগুলোতে কোনো খাবার দেওয়া হয় না। কিনে খেতে হয়। আর প্লেনে খাবার কিনে খাওয়া ব্যয়বহুল, ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে।

আপনি যদি কানাডায় কোনো ডোমেস্টিক এয়ার ব্যবহার করেন, তখন ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে নিশ্চিত হয়ে নেবেন আপনি আপনার লাগেজ কোন এয়ারপোর্ট থেকে নেবেন। কিছু এয়ারলাইনস আপনার শেষ গন্তব্য পর্যন্ত ব্যাগ নিয়ে যাবে, আবার কিছু এয়ারলাইনসে আপনাকে টরন্টো, ভ্যানকুভার বা মন্ট্রিয়াল থেকে ব্যাগ নিয়ে আবার ডোমেস্টিক এয়ারে দিতে হতে পারে। বিষয়টি আগে জানা থাকলে সুবিধা হয়। ব্যাগ পাওয়া না গেলে এয়ারপোর্টে রিপোর্ট করবেন।

কানাডায় ইমিগ্রশনের সময় ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তারা হেল্পফুল। তাদের স্মার্টলি হ্যান্ডেল করবেন। অতিরিক্ত কোনো কথা না বলে বিনয়ী আচারণ করা উচিত। মনে রাখতে হবে, ভিসা অফিসার ইচ্ছা করলে আপনাকে কানাডা থেকে ফিরিয়ে দিতে পারেন। নামার পর অনলাইনে আপনার একটি ফরম পূরণ করতে হয়। খুবই সাধারণ ইনফরমেশন দিতে হয়। সেখানে কোনো ভুল ইনফরমেশন দেবেন না।

আপনি যদি কানাডায় কোনো ডোমেস্টিক এয়ার ব্যবহার করেন, তখন ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে নিশ্চিত হয়ে নেবেন, আপনি আপনার লাগেজ কোন এয়ারপোর্ট থেকে নেবেন। কিছু এয়ারলাইনস আপনার শেষ গন্তব্য পর্যন্ত ব্যাগ নিয়ে যাবে, আবার কিছু এয়ারলাইনসে আপনাকে টরন্টো, ভ্যানকুভার বা মন্ট্রিয়াল থেকে ব্যাগ নিয়ে আবার ডোমেস্টিক এয়ারে দিতে হতে পারে। বিষয়টি আগে জানা থাকলে সুবিধা হয়। ব্যাগ পাওয়া না গেলে এয়ারপোর্টে রিপোর্ট করবেন।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যে ডলার বাংলাদেশ থেকে আনা যায়, তার চেয়ে বেশি ডলার সঙ্গে আনবেন না। পাসপোর্টে এন্ডোস করা ডলারের সঙ্গে আপনার সঙ্গে থাকা ডলারের যেন মিল থাকে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন।

দোহা-দুবাইসহ আরব দেশগুলোর বিমানবন্দরে ওয়াই–ফাই একটু দুর্বল বলে অনেকে বলে থাকেন। এই বিমানবন্দরগুলোর ওয়াই–ফাই থেকে শুধু খুদে বার্তা পাঠানো যায়। ব্যাপারটি খেয়াল থাকলে সুবিধা হয়।

সিগারেট দুই কার্টন ঘোষণা দিয়ে আনা যায়। অন্য সব তামাকজাতীয় পণ্য, রান্না করা মাছ-মাংস, দুধের কোনো জিনিস, উদ্ভিদ–কাঠজাতীয় কোনো কিছু সঙ্গে আনবেন না। অন্য কেউ যদি আপনার হাত দিয়ে পাঠাতে চায়, তাহলে ওই প্যাকেট খুলে পরীক্ষা করে দেখবেন, না হলে অন্যের জন্য নিজে বিপদে পড়তে পারেন। নিজের ওষুধ আনলে সঙ্গে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন থাকা উচিত।

যত আগে বিমানের টিকিট কাটবেন, তত খরচ কম পড়বে। তাই আগেভাগে টিকিট কাটা ভালো। শেষ সময়ে অনেক চাপ থাকে বলে টিকিটের দাম অনেক বেশি থাকে। তাই ভিসা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট কেটে ফেলা উচিত। চলবে...