দক্ষিণ কোরিয়া যেভাবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের গন্তব্য হয়ে উঠছে

দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী বাড়াতে চায়। এ জন্য দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। দ্রুত কমতে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ঠিক রাখতে এবং তিন লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে পাঁচ বছরের এ পরিকল্পনা সম্প্রতি তুলে ধরেছে দেশটি।

উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনার মধ্যে আছে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিবিষয়ক সরকারি নীতিতে বদল, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি বৃত্তি বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের পড়ার সময় কাজের সুযোগ বাড়ানো, বিদেশি শিক্ষকদের—বিশেষ করে বিজ্ঞান-সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো, বিদেশি শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরির সময় বাড়ানো এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শেষে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করার সুযোগসহ নাগরিকত্বের সুযোগ রেখে ভিসা নীতিতে পরিবর্তন আনছে। আর এ কারণে এখন বিদেশি অনেক শিক্ষার্থীর গন্তব্য এখন দক্ষিণ কোরিয়া।

প্রতিবছর দক্ষিণ কোরিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলোর একটি। ২০১৫ সালে জিডিপির ভিত্তিতে কোরিয়া বিশ্বের ১১তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ছিল। দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা সর্বজনস্বীকৃত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নানা বৃত্তি দেয়।

কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্রাবাস শিক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ। আবার কেউ ক্যাম্পাসের বাইরে এক রুমের ফ্ল্যাটে, বোর্ডিং হাউসে বা কোরিয়ায় পরিবারের সঙ্গে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকার সুযোগও আছে। যদিও দেশটিতে ইংরেজির প্রচলন ব্যাপকভাবে হয় না, তবে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং তরুণেরা বেশ সাবলীলভাবে ইংরেজি বলতে পারেন। কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দুই ধরনের বৃত্তি দেয়।

*স্কলারশিপ টাইপ এ
রাজধানী সিউল মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বৃত্তি দেয়। এ বৃত্তিটি রেকর্ডধারী জিপিএ প্রাপ্ত  স্নাতক শিক্ষার্থী পান। এ বৃত্তিতে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ টিউশন ফি ফ্রি। জিপিএর সঙ্গে অধ্যাপকের সুপারিশ থাকলে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ টিউশন ফি ছাড় পেয়ে যান। কাঙ্ক্ষিত গ্রেড ছাড়া শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের সুপারিশ থাকলেও শিক্ষার্থীরা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি মওকুফ পাবেন।

*স্কলারশিপ টাইপ বি
সিউল মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বৃত্তি দেয়। বৃত্তিটি রেকর্ডধারী জিপিএপ্রাপ্ত স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি দেবে। রেকর্ডধারী জিপিএ প্রাপ্ত এবং অধ্যাপক, গবেষক, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সুপারিশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ টিউশন ফিতে ছাড় রয়েছে। ভাষার দক্ষতা থাকলে প্রায় ৮০ শতাংশ টিউশন ফি ছাড় দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।

দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয় হলো—
•সিউল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
•ইয়নসেই বিশ্ববিদ্যালয় (সিউল ক্যাম্পাস)
•কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (কেএআইএসটি)
•সুংকিয়ঙ্কওয়ান বিশ্ববিদ্যালয় (এসকেকেইউ)
•পোহাং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (পোস্টেক)
•উলসান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ইউএনআইএসটি)
•কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
•কিউং হি ইউনিভার্সিটি
•সেজং বিশ্ববিদ্যালয়
•হ্যানইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি