অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান
অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

গল্প বলা সেশন শিশুদের পড়তে উৎসাহিত করে

শিশুদের নিয়মিত গল্প বলার পাঠ দিলে তাদের আগ্রহ বেড়ে যায়। এতে শিশুরা পড়াশোনায় অনেক বেশি উৎসাহী হয়ে ওঠে। আর এই বিষয়কে কাজে লাগাতে যুক্তরাজ্যে কর্নওয়ালের গ্রন্থাগারগুলো শিশুদের গল্প বলার জন্য সেশন চালুর আয়োজন করেছে। দাতব্য শিক্ষার অংশ হিসেবে এই সেশন চালু করা হয়েছে। গ্রন্থাগারগুলো বলছে, আনন্দের জন্য পড়তে পছন্দ করে এমন তরুণদের সর্বনিম্ন সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে।

ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রতি তিনজনের মধ্যে মাত্র একটি শিশু বলেছে, তারা আনন্দের জন্য পড়তে পছন্দ করে। ট্রাস্ট বলছে, এটি গত ২০ বছরে রেকর্ড করা সর্বনিম্ন স্তরের পাঠ।

ফ্যালমাউথ লাইব্রেরির ম্যানেজার জেন কার্ডিউ বলেছেন, লাইব্রেরিগুলোয় গল্প বলার অনুষ্ঠান শিশুদের বই পড়ার প্রতি উত্সাহিত করছে। তিনি বলেন, আপনি যদি শিশুদের বইয়ের কাছে নিয়ে না যান, তাহলে সেখান থেকে তারা মুখ ফেরাবে।
ফ্যালমাউথের শিক্ষক ও একজন মা পলি সম্প্রতি একটি গল্প বলার আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘বাচ্চাদের জন্য বইয়ের মডেল হওয়া দেখতে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাদের অবশ্যই তাদের মা–বাবাকে বই পড়তে এবং উপভোগ করতে দেখতে হবে।’

জেন কার্ডিউ বলেছেন, তিনি বইয়ের শারীরিক প্রকৃতিকে গুরুত্ব দেন। তিনি আরও বলেন, ‘এটি হলো বাচ্চাদের লাইব্রেরিতে আসা, বই ধরে দেখা, গল্প শোনা এবং তাদের পুরো অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত করা। কারণ, যখন তারা নিজেরাই পড়তে শুরু করে, তখন এটা তাদের জন্য একটি দুর্দান্ত ভিত্তি তৈরি করে।’

শিশুতোষ বইয়ের লেখক লিজ কেসলার ১২ বছর ধরে সেন্ট আইভসে থাকেন। তিনি বলেন, ‘একটি অনুষ্ঠান শেষে আমার কাছে দুটি মেয়ে এসেছিল। তারা প্রায় ফিসফিস করে বলেছিল, “আমরা শুধু বলতে চেয়েছিলাম যে আমরা সত্যিই আপনার বইগুলোকে ভালোবাসি”।’

লিজ কেসলার তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল পড়া উপভোগ করে কি না, তখন কেন তারা হাত ওপরে তোলেনি। এর জবাবে ওই দুই শিক্ষার্থী বলেছিল, ‘ক্লাসে আমরা অন্যের বুলির (হেনস্তা) শিকার হতে হতে চাইনি।’
ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার জো নাকি বলেন, ‘বইয়ের সঙ্গে সব ধরনের সম্পৃক্ততা মূল্যবান। কাউকে বইয়ের সঙ্গে দেখাটা খুব আনন্দের।’

জো নাকি আরও বলেন, ‘শিশু ও তরুণদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, তারা পড়াকে তাদের কল্পনার অংশ মনে করে। তারা যদি ট্যাবলেট, স্মার্টফোনে থেকে পড়ে বা অডিও বই শোনে তাহলেও আমরা আনন্দিত।’