ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকতে চান না সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে রাজধানীর নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে রেখেছেন তাঁরা।
এতে নীলক্ষেত ও আশপাশের রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে পথচারীদের ভোগান্তি। বেলা দুইটার দিকে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
দুপুরে নীলক্ষেত মোড় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আশপাশে প্রচুর যানজট। যাত্রীরা বাস, রিকশা থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চান। ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত ছিল অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এই কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত ৭ বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য তাঁরা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকতে চান না। দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানান। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকভাবে তিনটি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চান। এগুলো হলো, এক. সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে। দুই. সংস্কার কমিটি অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে শুধুমাত্র সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবে। তিন. সংস্কার কমিটি বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। যাতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজগুলো হলো, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জুয়েল রানা বলেন, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না হয় পুলিশ সেই চেষ্টা করছে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা করেছে বলে জানান তিনি।
এডিসি বলেন, ‘আমরা তাঁদের অনুরোধ করেছি যেন সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি না হয় ও অন্য কেউ আন্দোলনের সুযোগ নিতে না পারে।’