প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে এখন ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, প্রত্যেক বিভাগেই একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব। কারণ, আমাদের ডাক্তার, নার্স ও দক্ষ জনশক্তির পাশাপাশি চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণারও প্রয়োজন। সে জন্য আলাদা ফান্ডও দেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘কমিউনিটি আই সেন্টার স্থাপন’ কার্যক্রমের চতুর্থ পর্যায়ে ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ‘কমিউনিটি আই সেন্টার’ উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালকে আরও আধুনিক ও উন্নত করা হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা যদি ভবিষ্যতে জাতির সেবা করার আরেকটি সুযোগ পাই, ইনশা আল্লাহ, আমরা স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং প্রতিটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালের আরও উন্নয়ন করব।’
প্রধানমন্ত্রী একই অনুষ্ঠানে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্প ও পুনঃখননকৃত ৪৩০টি ছোট নদী-খাল-জলায়ের উদ্বোধন এবং নতুন অনুমোদিত ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিকে চার থেকে পাঁচ হাজার শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলব।’ তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ না এলে এবারই তাঁর সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আধুনিকায়নের কাজ সম্পন্ন করে ফেলত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় এবং রিজার্ভে টাকা জমা পড়ায় আমরা দুহাতে টাকা খরচ করে মানুষকে বাঁচিয়েছি।’
বিএনপির চিন্তার দৈন্য ও স্বার্থপরতার বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কমিউনিটি ক্লিনিক করেছে। এগুলোয় যারা চিকিৎসা নেবে, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে পারে, সে আতঙ্কে খালেদা জিয়া ২০০১ সাল–পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় এসে জনস্বার্থের কথা চিন্তা না করে ’৯৬–পরবর্তী সময়ে তাঁর সরকার প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন সারা দেশে ৫ হাজারের অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং সেখান থেকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনা মূল্যে প্রদানসহ নানা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে আর কেউ বন্ধ করতে না পারে, সে জন্য ট্রাস্ট ফান্ড করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। বিএসএমএমইউ প্রতিষ্ঠা করার সময় বিএনপির ডাক্তারদের অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু দেশে এখন ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ মোট পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, প্রত্যেক বিভাগেই একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব।
কারণ, আমাদের ডাক্তার, নার্স ও দক্ষ জনশক্তির পাশাপাশি চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণারও প্রয়োজন। সে জন্য আলাদা ফান্ডও দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ থেকে এ পর্যন্ত তাঁর সরকার বেশ কিছু বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল গড়ে তুলেছে, যার ফলে কর্মসংস্থান যেমন বেড়েছে, তেমনি মানুষ সেবা ও চিকিৎসা পাচ্ছে।