বিজনেস কেস প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দেশের অগ্রণী প্ল্যাটফর্ম ‘ব্যাটল অব মাইন্ডস’-এর ২১তম সংস্করণের সমাপনী অনুষ্ঠান র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে
বিজনেস কেস প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দেশের অগ্রণী প্ল্যাটফর্ম ‘ব্যাটল অব মাইন্ডস’-এর ২১তম সংস্করণের সমাপনী অনুষ্ঠান র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে

‘ব্যাটল অব মাইন্ডস-২০২৪-এর বিজয়ী বিইউপি’র টিম পারডন আস, কামিং থ্রু

‘ব্যাটল অব মাইন্ডস’-এর ২১তম সংস্করণে বিজয়ী হয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) দল পারডন আস, কামিং থ্রু। বিজনেস কেস প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দেশের অগ্রণী প্ল্যাটফর্ম ‘ব্যাটল অব মাইন্ডস’-এর সমাপনী অনুষ্ঠান গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ প্রতিযোগিতা সক্ষমতার বিকাশ, সীমাবদ্ধতা অতিক্রম ও সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মেধাবী ও সম্ভাবনাময় তরুণদের অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের ব্যবসায়িক প্রাঙ্গণে নেতৃত্ব দান করতে প্রস্তুত করে তোলে।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি তরুণদের ক্ষমতায়নের রূপান্তরমূলক শক্তির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তাদের অমিত সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়া তিনি তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদান এবং তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও নেতৃত্বকে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখার জন্য ‘ব্যাটল অব মাইন্ডস’-এর প্রশংসা করেন।

ব্যাটল অব মাইন্ডসের এবারের আসরে ৭০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৭০০-এর বেশি প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী দলটি বৈশ্বিক পর্বে ২৫টি দেশের বিজয়ী দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে। বৈশ্বিক পর্বের বিজয়ীরা তাঁদের উপস্থাপিত ধারণা বাস্তবায়নের জন্য সিড ফান্ড হিসেবে ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড পাবেন।

এ বছরের প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু ছিল মূলত প্রোডাক্ট বা এআই রেভল্যুশনের মধ্যে যেকোনো একটি চ্যালেঞ্জকে বেছে নিয়ে সংশ্লিষ্ট খাতে ইতিবাচক ভূমিকা আনা। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে বিইউপির দল পারডন আস, কামিং থ্রু। বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন মো. নাহিয়ান হাসান, রিদাহ তারান্নুম মেহমুদ, আদীবা রুকাইয়া হাসান। বিজয়ী দল অন্য দক্ষতা ও সক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে অন্য চারটি ফাইনালিস্ট দলকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হওয়ার স্বীকৃতি অর্জন করে। বিজয়ী দলের বিজনেস প্ল্যান ছিল কাঁঠালের স্বাদকে নতুন রূপে নিয়ে আসা জ্যাকো ন্যাচারাল জ্যাকফ্রুট চিপস। ক্ল্যাসিক সেভরি, আচারি টুইস্ট, বিবিকিউ ডিলাইট ও গ্রিলড চিজ—সুস্বাদু এসব ফ্লেভারের স্বাস্থ্যকর সুপার-স্ন্যাকটিতে রয়েছে পুষ্টিগুণে ভরপুর উপাদান, সঙ্গে দুর্দান্ত স্বাদ।  

প্রথম রানার্সআপ হয়েছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সামিহা মাসুদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ ফসিউল আবেদীন খান এবং খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্পা সাহার দল সিডসিঙ্ক। তাদের বিজনেস প্ল্যান ছিল ওয়েলনেস ড্রিংক লাইন ‘বাবল’। যা নারীদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় ও হরমোনের সাইকেল ঠিক রাখতে সহায়তা করার মাধ্যমে তাদের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে। এ ড্রিংকের তিনটি ভেরিয়েন্ট রয়েছে। প্রতিটি ভেরিয়েন্টে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান ও কার্যকর ফর্মুলেশনের চমৎকার সমন্বয়, যা নারীদের সুস্থতায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছে নিউরনস। এ দলের সদস্যরা হলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আবির মোহাম্মদ সাদ, সাদিয়া আহমেদ এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ফারহান ইশতিয়াক। তাঁদের আইডিয়া ছিল মস্তিষ্কের কার্যক্রম বোঝার মাধ্যমে অবচেতন মনে ভোক্তাদের আচরণ বিশ্লেষণে নিউরোমার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ইইজি ও আই-ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আরও কার্যকর ও ফলপ্রসূ ক্যাম্পেইন ও কমিউনিকেশন প্ল্যান এবং পণ্যের ডিজাইন করতে পারবে।  

ব্যাটল অব মাইন্ডস প্রতিযোগিতা ২০০৪ সাল থেকে তরুণদের প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ প্রতিযোগিতা তরুণদের উদ্ভাবনী ধারণা, অগ্রণী প্রযুক্তি ও দূরদর্শী সমাধানের মাধ্যমে পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসার সুযোগ প্রদান করছে। ব্যাটল অব মাইন্ডসের প্রায় ২ হাজার সদস্যের একটি সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে। ধারাবাহিকভাবেই এর অ্যালামনাইরা তাঁদের কাজের জন্য খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি পেশাগত জায়গায় এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দান করে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।