হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ ও অন্য সুযোগ-সুবিধা কেমন

চাকরি বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সহজলভ্যতার সঙ্গে শিক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ও উন্নত ক্যারিয়ারের বিষয়টি সম্পৃক্ত। এই সুবিধা আরও বহুগুণে বেড়ে যায়, যখন একাধিক দেশে ভ্রমণের সুযোগ থাকে। মূলত এ কারণেই উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা পাড়ি জমান শেনজেনভুক্ত দেশ হাঙ্গেরিতে। গত কয়েক বছরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের অফুরন্ত সম্ভাবনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে দেশটি। জেনে নেওয়া যাক, হাঙ্গেরিতে কোন বিষয়ে চাকরির বাজার ভালো, আবেদনপদ্ধতি ও পড়াশোনার খরচ, বৃত্তিসহ যাবতীয় তথ্য।

হাঙ্গেরি ভাষা দক্ষতা বাধ্যতামূলক নয়। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরি এবং পড়াশোনা শেষে ভালো চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াবে। হাঙ্গেরি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ বছরের স্টাডি-গ্যাপ পর্যন্ত অনুমতি দেয়। তবে কমপক্ষে ১২ বছরের অধ্যয়ন (উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত) সময়সীমা সম্পন্ন করা আবশ্যিক।

উচ্চশিক্ষায় কেন হাঙ্গেরি বেছে নেবেন

হাঙ্গেরিতে মেলে তুলনামূলক স্বল্প খরচে উচ্চমানের শিক্ষা লাভের সুযোগ। কিউএস র‌্যাংকিংয়ে দেশটির সেজেড ইউনিভার্সিটি আছে ৬০১ নম্বর অবস্থানে। ডেব্রেসেন ইউনিভার্সিটির অবস্থান ৬৭১, ইওত্ভস লোর‌্যান্ড ইউনিভার্সিটি ৭০১, বুদাপেস্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইকোনমিকস ৭৪১ ও পেচ ইউনিভার্সিটি ৮০১-এ।

জীবনযাত্রার ব্যয়ভারের দিক থেকেও আধুনিক দেশটি ইউরোপের সবচেয়ে অল্প খরচের দেশগুলোর একটি। যেমন বুদাপেস্টে থাকার খরচ প্রাগ, জুরিখ, মাদ্রিদ ও এথেন্সের মতো শহরগুলোর তুলনায় কমপক্ষে ৩০ শতাংশ কম। তাই বাজেট–সচেতন মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য হাঙ্গেরি সেরা বিকল্প। এ ছাড়া ক্রাইম ইনডেক্সে প্রতি লাখে ৩৩ দশমিক ৮ হওয়ায় নিরাপদ দেশ হিসেবে ইউরোপের সেরা দেশগুলোর মধ্যে হাঙ্গেরি একটি।

হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষার আবেদনের যোগ্যতা কী

উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের হাঙ্গেরিকে নির্বাচন করতে হলে কিছু পূর্বশর্ত পূরণ করতে হবে। সেগুলো হলো—

* আন্ডারগ্র্যাজুয়েশনের জন্য হাইস্কুল ডিপ্লোমা বা সমমানের একাডেমিক ডিগ্রি

* গ্র্যাজুয়েশনের জন্য স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি

* পিএইচডির জন্য স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি

* মেডিসিন, ফার্মেসি, দন্তচিকিৎসা, প্রকৌশল, স্থাপত্য, আইন, মনোবিজ্ঞান এবং তথ্যবিজ্ঞানের মতো প্রোগ্রামগুলোর জন্য নির্দিষ্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।

* ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রে, আন্ডারগ্র্যাজুয়েশনের জন্য টোয়েফলে স্কোর লাগবে ৭২, স্নাতকের জন্য ৭৯, এবং পিএইচডির জন্য ৯০। আইইএলটিএস স্কোর আন্ডারগ্র্যাজুয়েশনের জন্য ৫.৫, স্নাতকের জন্য ৬.০, এবং পিএইচডির জন্য ৬.৫।

হাঙ্গেরির সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স কোনগুলো

* সেজেড ইউনিভার্সিটি

* ডেব্রেসেন ইউনিভার্সিটি

* ইওত্ভস লোর‌্যান্ড ইউনিভার্সিটি

* বুদাপেস্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইকোনমিকস

* পেচ ইউনিভার্সিটি

* করভিনাস ইউনিভার্সিটি অব বুদাপেস্ট

* হাঙ্গেরিয়ান ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেস

* জ্যাকেনি ইসৎভান ইউনিভার্সিটি

* মিশকল্টস ইউনিভার্সিটি

* প্যানোনিয়া ইউনিভার্সিটি

এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো হলো—

* তথ্যবিজ্ঞান

* তথ্যপ্রযুক্তি

* আইন

* ন্যাচারাল সায়েন্স

* চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান

* ব্যবসা ও অর্থনীতি

* স্থাপত্য

* প্রকৌশল

* মেডিসিন

* দন্তচিকিৎসা

* ব্যবসায় প্রশাসন

আবেদন করবেন যেভাবে

অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বছরের সাধারণত দুটি সময়ে ভর্তি নেওয়া হয়। একটি হচ্ছে সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া ফল সেমিস্টারে এবং আরেকটি ফেব্রুয়ারিতে স্প্রিং সেমিস্টারে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের পদ্ধতি ভিন্ন, যা ভর্তির মৌসুমগুলোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। নথি আপলোড এবং আবেদন ফি দেওয়ার মাধ্যমে আবেদনপ্রক্রিয়া এই অনলাইন পোর্টালগুলোর মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নথিপত্রগুলো নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই ডাকযোগে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে পাঠাতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবেদনপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্কাইপে বা জুমের মাধ্যমে অনলাইনে সাক্ষাৎকার নেওয়াও হয়ে থাকে।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনের সময় আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের নিকট যে কাগজপত্রগুলো চেয়ে থাকে, তা হলো—

* অনলাইনে পূরণকৃত সম্পূর্ণ আবেদন

* ইংরেজিতে অনূদিত বিগত পরীক্ষার সনদের প্রতিলিপি

* মোটিভেশন লেটার

* ব্যক্তিগত আইডি বা পাসপোর্টের কপি

* ২ থেকে ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

* ন্যূনতম ২ কপি একাডেমিক রেফারেন্স লেটার

* হালনাগাদ সিভি

এর বাইরেও সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি চাইতে পারে।

স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন যেভাবে

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার পাওয়ার পরই স্টাডি ভিসার কাজ শুরু করতে হবে। হাঙ্গেরির দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় ভিসা (টাইপ ডি)-ই মূলত এখানে স্টুডেন্ট ভিসা। এই ভিসায় শুধু হাঙ্গেরিতে একবার প্রবেশে ৯০ দিনের বেশি থাকার অনুমতি পাওয়া যায়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

* কমপক্ষে দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠাসহ ন্যূনতম ছয় মাসের মেয়াদ সম্পন্ন বৈধ পাসপোর্ট

* সম্পূর্ণ এবং স্বহস্তে স্বাক্ষরিত ভিসা আবেদনপত্র

* সদ্য তোলা ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

* হাঙ্গেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার, যেখানে নির্বাচিত প্রোগ্রামের নাম, সময়কাল, শুরুর তারিখ এবং টিউশন ফি উল্লেখ থাকবে

* টিউশন এবং জীবনযাত্রার খরচের জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের প্রমাণপত্র (৩ থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ ইউরো)।

* ন্যূনতম ৩০ হাজার ইউরোর (৩৮ লাখ ১৪ হাজার ৩৪৬ টাকা) চিকিৎসাবিমা

* হাঙ্গেরি ফ্লাইটের টিকিট

* শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র

* সিভি

* মোটিভেশন লেটার চিঠি

নথিগুলো সব একসঙ্গে নিয়ে সরাসরি চলে যেতে হবে হাঙ্গেরি কনস্যুলেট অফিসে। বর্তমানে বাংলাদেশের এই কনস্যুলেট অফিস থেকেই ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করা যায়।

অফিসের ঠিকানা: লেভেল-৬, কনকর্ড আই-কে টাওয়ার, প্লট নং ২, ব্লক সিইএন (এ), মাদানি অ্যাভিনিউ, ঢাকা। এখানেই ভিসার ইন্টারভিউ নেওয়া হয় সংঘটিত হয় এবং এখান থেকে পরবর্তী সময়ে ভিসা সংগ্রহ করতে হয়।

হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার খরচ

ইউরোপের অন্যতম সাশ্রয়ী খরচে পড়াশোনা করা যায় হাঙ্গেরিতে। ডিগ্রির সময়কাল, বিষয়ের ধরন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেদে টিউশন ফি ভিন্ন হয়ে থাকে। গড়পড়তায় এ খরচ প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ইউরো। প্রকৌশলের প্রোগ্রামগুলোয় প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার ইউরো (৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭২৫ টাকা) পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে। মেডিসিন বা ডেন্টিস্ট্রিতে বার্ষিক খরচ সাধারণত প্রায় ৬ থেকে ৮ হাজার ইউরো।

হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপের সুবিধা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য ইউরোপীয় দেশটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত বৃত্তির সুযোগ। অধিকাংশ বৃত্তিগুলোয় টিউশনসহ বাসস্থান ও পরিবহনের অর্থের জোগান হয়ে যায়। এগুলোর মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় হচ্ছে স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গারিকাম স্কলারশিপ। প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। এর আওতায় রয়েছে সম্পূর্ণ টিউশন খরচ, প্রতি মাসে ১২০ ইউরোর উপবৃত্তি এবং চিকিৎসাবিমা। আবাসন খরচের জন্য রয়েছে মাসিক ৪০ হাজার হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ত, (১ হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ত =শূন্য দশমিক ৩২ টাকা) সমান।

আরও একটি জনপ্রিয় বৃত্তি হচ্ছে ইরাসমাস মুন্ডাস, যেখানে টিউশন ফি কভারেজের পাশাপাশি ১ হাজার ইউরোর মাসিক ভাতা মেলে।

হাঙ্গেরিয়ান ডায়াস্পোরা স্কলারশিপে রয়েছে ১ বছর মেয়াদি অধ্যয়নের জন্য জীবনযাত্রার খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৪৩ হাজার ৭০০ হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ত। আরও আছে চিকিৎসাবিমা এবং প্রতিদিন ৪০০ হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্তের ভ্রমণবিমা।

ইউনিভার্সিটি অব ডেব্রেসেন ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপে প্রথম বছরের টিউশন ফিতে ৩০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়।

টেম্পাস পাবলিক ফাউন্ডেশন বাইলেটারাল স্টেট স্কলারশিপ সম্পূর্ণ বা আংশিক অধ্যয়ন খরচ বহন করে। সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি মাস্টার্স স্কলারশিপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সম্পূর্ণ টিউশন, স্বাস্থ্যবিমা ও মাসিক উপবৃত্তি।

হাঙ্গেরিতে জীবনযাত্রার জন্য আর্থিক ব্যবস্থাপনা

আবাসন, খাবার, পরিবহনসহ জীবনযাত্রার যাবতীয় খরচের ক্ষেত্রে অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় হাঙ্গেরি অনেকটাই সাশ্রয়ী। রাজধানী বুদাপেস্টে মাসিক খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ৬০০ ইউরো, যা অন্যান্য ছোট শহরগুলোয় সর্বোচ্চ ৫০০ ইউরো পর্যন্ত উঠতে পারে।

বাড়িভাড়া বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রে সেজেড শহরে খরচ হতে পারে ৩৩০ থেকে ৪৪০ ইউরো এবং মিশকল্টস-এ ২৮০ থেকে ৩৮০ ইউরো। ডেব্রেসেন ও পেচ-এর ক্ষেত্রে এই পরিমাণটি প্রায় একই; ৩০০ থেকে ৪০০ ইউরো।

বাড়িভাড়ার খাতে গড়পড়তায় প্রতিবছর খরচ হয় প্রায় ৩ থেকে ৫ হাজার ইউরো। এ ধাক্কাটা কাটিয়ে ওঠার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলো, যেখানে মাসিক ভাড়া ১০০ ইউরোরও (প্রায় ১২ হাজার ৭১৫ টাকা) কম।

হাঙ্গেরি সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন খরচ জোগাতে পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা খণ্ডকালীন চাকরি করার অনুমতি দেয়। সেখানে ছাত্রছাত্রীরা দৈনিক ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। এ ছাড়া সপ্তাহান্তে বা বিভিন্ন ছুটির দিনগুলোয় কর্মঘণ্টার কোনো ধরাবাঁধা হিসাব নেই। তাই এ সময়গুলোয় তাঁরা নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারেন। সব মিলিয়ে মাসে ৩০০ থেকে ৭০০ ইউরো চলে আসে, যা জীবনযাত্রার ব্যয়ের জন্য যথেষ্ট।

শিক্ষার্থীদের আরও একটি বড় সুবিধা হচ্ছে স্টুডেন্ট কার্ড। এই কার্ডের মাধ্যমে ক্যাফে, রেস্তোরাঁ, পরিবহন ও কেনাকাটায় অনেক ছাড় পাওয়া যায়। তা ছাড়া পাবলিক পরিবহনগুলো এমনিতেই অত্যন্ত সস্তা। এর ওপর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভাড়া আরও কমে আসে।

চাকরি ও স্থায়ী বসবাসের সম্ভাবনা কেমন

হাঙ্গেরিতে কমপক্ষে টানা তিন বছর বৈধভাবে অবস্থানের পর শিক্ষার্থীরা স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। অবশ্য এর মধ্যে প্রার্থী একটানা সর্বোচ্চ ৪ মাস বা ২৭০ দিনের বেশি হাঙ্গেরির বাইরে থাকতে পারবেন না। এ অনুমতিকে ন্যাশনাল পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পারমিট বা এনপিআরপি বলা হয়।

সদ্য পাস করা স্নাতকদের জন্য হাঙ্গেরিতে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপায় হচ্ছে ‘স্টাডি-টু-ওয়ার্ক’ পারমিট। এ অনুমতি শিক্ষার্থীকে স্নাতক শেষ করার পরে হাঙ্গেরিতে আরও ৯ মাস থাকতে দেয়। এর মধ্যে তাঁকে একটি চাকরি খুঁজে নিতে বা একটি ব্যবসা শুরু করতে হয়।

এই পারমিটের জন্য হাঙ্গেরিয়ান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সদ্য স্নাতক করা যেকোনো বিদেশি শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারেন। তবে তাঁকে অবশ্যই তাঁর স্টুডেন্ট রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে এই আবেদন করতে হবে।

‘স্টাডি-টু-ওয়ার্ক’ পারমিট কর্তৃপক্ষ যা খতিয়ে দেখে

প্রার্থী চাকরি খুঁজছেন কি না বা কোনো কোম্পানি স্থাপনের চেষ্টা করছেন কি না (অবশ্য এর জন্য পেশাগত পরামর্শ দেওয়া হয়)

* হাঙ্গেরিতে থাকার জন্য প্রার্থীর কাছে যথেষ্ট তহবিল আছে কি না

* প্রার্থীর বৈধ স্বাস্থ্যবিমা আছে কি না

* হাঙ্গেরিতে প্রার্থীর বসবাসের কোনো আশ্রয় আছে কি না

* কোনো কারণে আবেদন গ্রহণ না হলে হাঙ্গেরি ছেড়ে যাওয়ার উপায় আছে কি না

শুধু তা–ই নয়, যদি হাঙ্গেরির নাগরিকত্ব কেউ পেয়ে পান, তাহলে সেই ডকুমেন্টসে ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইতালি গিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় বসবাসের সুযোগ মেলে।

সর্বসাকুল্যে হাঙ্গেরিতে স্থায়ী হতে হলে ডিগ্রি শেষে আয়ের বৈধ ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা করা অপরিহার্য। তবে সেটি ডিগ্রির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সেখানে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছে কাজের অবারিত সুযোগ। তবে প্রাসঙ্গিক বিষয়ের চাকরিগুলোয় ভালো বেতন ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকে। বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা ও এডুকেশন সেক্টরে বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। এ ছাড়া পর্যটন, বাণিজ্য ও বিপণন খাতে প্রতিনিয়ত প্রচুর ভ্যাকেন্সি থাকে। তথ্যসুত্র : ইউএনবি