হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাফটন লাইব্রেরিতে আছে ‘ডেসটিসিজ অব দ্য সোল’ নামের বইটি
হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাফটন লাইব্রেরিতে আছে ‘ডেসটিসিজ অব দ্য সোল’ নামের বইটি

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বইয়ের বাঁধাইয়ে থাকা মানব চামড়া সরাল

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে থাকা ১৯ শতকের একটি বইয়ের মানবত্বকের বাঁধাই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত ৯০ বছর মানুষের চামড়ায় বাঁধানো ওই বইটি লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই বইটি থেকে মানুষের চামড়া সরিয়ে নিয়েছে তারা।

১৯৩০-এর দশক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাফটন লাইব্রেরিতে রয়েছে ‘ডেসটিসিজ অব দ্য সোল’ নামের বইটি। ২০১৪ সালে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে বইটির বাঁধাই আদতে মানুষের চামড়া দিয়ে করা হয়েছিল। এক নারীর চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা হয়েছিল বইটি।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, চামড়াটি অপসারণ করা হয়েছে এবং ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, বইয়ের উৎপত্তি ও পরবর্তী ইতিহাসের নৈতিকভাবে বিতর্কিত প্রকৃতির কারণে তারা ওই বইয়ের বাধাই খুলে ফেলেছে।

১৮৮০-এর দশকে ফরাসি লেখক আর্সিন হোসায়ের আত্মা ও মৃত্যুপরবর্তী জীবন নিয়ে মেডিটেশন–বিষয়ক ‘ডেসটিসিজ অব দ্য সোল’ বইটি লেখেন। বইটি লিখে তিনি তাঁর চিকিৎসক বন্ধু লুডোভিক বোল্যান্ডকে দিয়েছিলেন। বইটির প্রথম মালিক ছিলেন লুডোভিক বোল্যান্ড। তিনি একটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ওই হাসপাতালের একজন মানসিক রোগী মারা যান। ওই নারীর মৃত্যুর পর তাঁর লাশ নিতে কেউ আসেননি। এরপরই তাঁর চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেন বোল্যান্ড। কথিত আছে, বোল্যান্ড স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া ওই নারী রোগীর পিঠের চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেন।

বইটি থেকে খুলে নেওয়া মানব দেহাবশেষটির সম্মানজনক কোনো ব্যবস্থা করতে চায় বলেও জানিয়েছে বিশ্বের অন্যতম এই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া অজ্ঞাত ওই নারীর জীবন নিয়েও গবেষণা করছে হাফটন লাইব্রেরি। ১৯৩৪ সালে হার্ভার্ডে আনা হয় বইটি। বইয়ের সঙ্গে ছিল চিকিৎসক বুলান্ডের একটি চিরকুট। ‘মানব আত্মা নিয়ে লেখা একটি বইয়ে মানব ত্বকের বাঁধাই থাকাটাই উপযুক্ত’—লেখেন তিনি।