ইরানিয়ান কম্বিনেটরিকস অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ অর্জন করেছে ৮ পদক—১টি সোনা ও ৭টি ব্রোঞ্জ।
কম্বিনেটরিকস হলো গণিতের একটি শাখা। এ বছরই প্রথমবার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। ইরান গত বছর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে আসছে। গত ৩০ জুলাই ভার্চ্যুয়ালি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ থেকে ৩৯টি দলে বিভক্ত হয়ে মোট ১০৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয় তিনটি বিভাগে: এলিমেন্টারি (নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারে), অ্যাডভান্সড (দশম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য) এবং ফ্রি (দ্বাদশ শ্রেণি বা তার ওপরে)। ফ্রি বিভাগে বাংলাদেশের অর্জন ১টি স্বর্ণপদক ও ১টি ব্রোঞ্জপদক।
স্বর্ণপদক পেয়েছে ফ্রি বিভাগে অংশ নেওয়া পাস্ট গ্লোরি দল। এই দলের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের নির্ঝর ও এস এম নাঈমুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির রহমান।
ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে নন-প্ল্যানার ট্রায়াঙ্গেল দল। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাইয়্যান জামিল ও সৌমিত্র দাস এবং আরেক শিক্ষার্থী জীম মীম সিদ্দিকী এ দলের সদস্য।।
অ্যাডভান্সড বিভাগে বাংলাদেশের অর্জন ৪টি ব্রোঞ্জ পদক। ব্রোঞ্জপদক প্রাপ্ত দলগুলো হলো কুড নট ফাইন্ড আ নেম, সিলভার স্কালস, এন এভিল ট্রিও এবং পটেটো স্কোয়াড।
কুড নট ফাইন্ড আ নেম দলের সদস্যরা হলো নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী তাহমিদ হামীম চৌধুরী, ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নুজহাত আহমেদ ও শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী এস এম এ নাহিয়ান।
সিলভার স্কালস দলে ছিল নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম ও ফাহিমফাইয়াজ এবং রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থী আহিল ইসলাম।
নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আদনান সাদিক, সরকারি আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী তাহজিব হোসেন খান ও ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী অম্লান দে অভীকের দল এন এভিল ট্রিও। আর পটেটো স্কোয়াড দলের সদস্যরা হলো সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী অনিন্দ্য বিশ্বাস, বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ফাহিম মুহতামিম ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী মো. মেহরাব হোসেন।
এলিমেন্টারি বিভাগে বাংলাদেশের অর্জন ২টি ব্রোঞ্জ পদক। ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে পাইরেটস অব কম্বিনেটরিকস ও দ্য চুজেন ওয়ানস দল। পাইরেটস অব কম্বিনেটরিকস দলের সদস্যরা হলো চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী রাহুল পাল, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী শাফিই আল এহতেশাম ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নাফিস আল জাহিদ।
দ্য চুজেন ওয়ানস দলে ছিল গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শিক্ষার্থী মো. আহনাফ ইনতেসার, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী জুনায়েদ লাবিব আল ওয়াসি ও মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জি এম সোয়েব রহমান চৌধুরী।
এলিমেন্টারি বিভাগে শিক্ষার্থীদের দুই ঘণ্টার মধ্যে ১৫টি সমস্যার সমাধান করতে হয়। অ্যাডভান্সড এবং ফ্রি বিভাগে শিক্ষার্থীরা পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে ১০টি সমস্যার সমাধান করে। শিক্ষার্থীরা তিন সদস্যের দল গঠন করে এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়। প্রত্যেক দলের জন্য একজন পরীক্ষক নির্ধারণ করা ছিল। পরীক্ষার পুরোটা সময় তিনি ভার্চ্যুয়ালি পর্যবেক্ষণ করেছেন।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড-২০২১ বিজয়ীদের মধ্য থেকে বাছাই করে ইরানিয়ান কম্বিনেটরিকস অলিম্পিয়াড প্রতিযোগীদের নির্বাচন করা হয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ পর্বের এই আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি দেশজুড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণিত প্রতিযোগিতার জন্য দল নির্বাচন করে থাকে।