নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী আগামী বছর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন হবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আজ শনিবার এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
বিকেলে মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণয়ন করা বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, এনসিটিবির চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম ও সদস্য (শিক্ষাক্রম) মো. মশিউজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বাছাই করা ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে। মার্চের শুরুতে বাছাই করা প্রাথমিক স্তরের ১০০ প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে তা শুরু হবে।
সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মূলত এখনই দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি আছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকেও কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন।
যখন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল, তখন হিসাব করে তাঁদের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষায় সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করার কথা বলেছিলেন। তখন প্রাথমিক কর্তৃপক্ষ সপ্তাহে এক দিন ছুটি রেখেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পক্ষ হয়ে বলেছিলেন, তাদেরও দুই দিন ছুটি লাগে। এ জন্য ঠিক করা হয়েছে, সব ক্ষেত্রেই সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন হবে। ২০২৩ সাল থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন হবে।
বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বেশির ভাগ স্কুলে এক দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ২০২৪ সাল থেকে নবম শ্রেণিতে এখনকার মতো বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিভাজন উঠে যাবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে। ২০২৩ সালে শুরুতে মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়িত হবে। ২০২৪ সালে শুরু হবে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। নবম শ্রেণির বই যেহেতু ২০২৪ সালে যাবে, তাই ওই বছর থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ভাগটি উঠে যাবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (শিখনকালীন) বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম—দুটিই থাকছে।