শিক্ষার্থীদের বেতন ও ফি নেওয়ার প্রক্রিয়া ‘ডিজিটাল’ করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ উদ্যোগের বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ‘ডিজিটালাইজড রসিদ’ সংগ্রহের মাধ্যমে বেতন-ফির যাবতীয় লেনদেন জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় করতে পারবেন। এ ছাড়া যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (বিকাশ, রকেট, নগদ, শিওরক্যাশ ইত্যাদি) ব্যবহার করেও কাজগুলো করা যাবে।
আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল শ্রেণিকক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘হিসাব অটোমেশন’ প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ পরিচালিত ‘ডিইউ-এআইএস প্রজেক্টের’ মাধ্যমে ১৫টি সফটওয়্যার মডিউলের সমন্বয়ে অটোমেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আসবে এবং সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। প্রশাসনের সব স্তরে এ সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তব রূপ লাভ করায় আমরা প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অটোমেশন প্রক্রিয়াটি চালু হতে আরও কিছুদিন লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হয়ে গেলে আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন থেকে শিক্ষার্থীদের ডিজিটালাইজড রসিদ সংগ্রহ করতে হবে। পরে তা বিভাগ-ইনস্টিটিউট থেকেও নেওয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানবিষয়ক অনুষদগুলোর শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ব্যাংকে বেতন-ফি জমা দিয়ে থাকেন। অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, শিগগিরই সব বিভাগ-ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা একই সঙ্গে অটোমেশনের সুবিধাগুলো পাবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই অটোমেশনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডিজিটালাইজড রসিদ সংগ্রহের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া হলে তাৎক্ষণিকভাবে জমার তথ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে নির্ভুলভাবে সন্নিবেশিত হবে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব খাতের আয়-ব্যয়, বিভিন্ন খাতের আর্থিক বিবরণী ও অর্থবছরের বাজেট দ্রুততম সময়ে তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, পেনশন, আয়কর, ইনস্যুরেন্স, ব্যাংক লোন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনিভোলেন্ট ফান্ড, শিক্ষকদের পরীক্ষাসংক্রান্ত বিল, বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ডের হিসাব ইত্যাদি এর ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী দ্রুততম সময়ে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন মো. হাসানুজ্জামান, হিসাব কম্পিউটারাইজেশন কমিটির আহ্বায়ক শান্তি নারায়ণ ঘোষ এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।