১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষী হয়েছে। শতবর্ষে পদার্পণের লগ্নে বিশ্ববিদ্যালয়টি ভবিষ্যৎ পথচলার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যতখানি শুভেচ্ছা লাভ করেছে, প্রায় ততখানিই হতাশা-অনুযোগের মুখোমুখি হয়েছে তার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দেশের অধিকাংশ কার্যনির্বাহী পদগুলোকে আলোকিত করেছেন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ সেই পথই অনুসরণ করবেন। তাই তাঁদের বক্তব্য-অভিমান-প্রত্যাশা নিঃসন্দেহে গুরুত্ববহ। প্রাক্তন অথবা বর্তমান শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা ও অধিকারবোধ থেকেই প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব মেলাচ্ছেন ধরে নিচ্ছি। কারণ, শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী তাঁর ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকে বলেছিলেন, ‘অন্তরে অমৃত না থাকলে মুখ দিয়ে অমন গরল বের হতো না।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগের তালিকা বেশ বড়। তার মধ্যে যে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, সেটা হলো ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না।’ তো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বর্তমান শিক্ষক হিসেবে এ ব্যাপারে কিছু জবাবদিহি করার নৈতিক দায়বদ্ধতা অনুভব করছি।
শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নয়, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিভিন্ন গুরুগম্ভীর আলোচনায় বারবার উঠে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা না হওয়ার কথা। আবার কখনো বলা হয় পদোন্নতিবান্ধব বিভাগীয় অথবা অনুষদভিত্তিক গবেষণা সাময়িকীর কথা। প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক-সামাজিক—সব মাধ্যমেই বেশির ভাগ সময় আলোচনা হয় গবেষণাকেন্দ্রিক শুধু সমস্যা নিয়েই। অথচ এসব সমস্যার কাঠামোগত কারণ অথবা টেকসই সমাধান নিয়ে আলোচনা খুব কম হয়। সমস্যার কারণ আর সমাধানের আগে একটি জিজ্ঞাসার মীমাংসা হওয়া প্রয়োজন। তা হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি আসলেই গবেষণা হয় না? নাকি গবেষণা হলেও তার প্রচার হয় না?
গবেষণা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি-সচেতন মানুষ আসলে কী বলতে চান? গবেষণা বলতে শিক্ষাবিদেরা কী বোঝেন বা বিভিন্ন ক্ষেত্রের গবেষকদের কাজের আলাদা ধরনকে আজকের নিবন্ধের আওতার বাইরে রেখে চলতি বাজারে জনপ্রিয় একটি তুলনার কথাতেই আসি। বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে করোনার টিকা বানিয়ে ফেলেছে, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এ সময়ে কী করেছে? চমৎকার প্রশ্ন। গার্ডিয়ান পত্রিকা জানাচ্ছে, অক্সফোর্ডের টিকা তৈরির কাজে সহায়তার জন্য ব্রিটিশ সরকার খরচ করেছে প্রায় ৩৯ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় ৪৫০ কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারের দেওয়া টাকায় চলে, সবাই জানেন। কিন্তু সরকার আসলে কত টাকা বরাদ্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে, তা জানতে সবাই আগ্রহী নন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বাজেট ছিল ৮৬৯ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা, যার মাত্র ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ রাখা হয়েছিল গবেষণা খাতে। অর্থাৎ সরকারের দেওয়া টাকা থেকে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে রাখা হয় মাত্র ৩৫ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ, আর তাকে নিয়ে দেখা হয় টিকা আবিষ্কারের স্বপ্ন। একেই বোধ হয় সাহিত্যিকেরা দিবাস্বপ্ন বলে থাকেন। নতুন অর্থবছরের উদাহরণ দিই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২১-২২ অর্থবছরের ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে, যেখানে বেতন-ভাতা-পেনশন খাতে ব্যয় হবে প্রায় ৭৪ শতাংশ এবং গবেষণা খাতে ব্যয় হবে ১ শতাংশের একটু বেশি। জি, ঠিক পড়েছেন। মোট বাজেটের ১ শতাংশ রাখা গেছে গবেষণা খাতে। এ বাজেট বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে সরকার দেবে ৬৯৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আর বিশ্ববিদ্যালয় নিজের খাতগুলো থেকে আয় করবে ৬৫ কোটি টাকা। ঘাটতি থেকে যাবে বাজেটের প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ইউজিসির মাধ্যমে সরকার যে অর্থ দেয়, তা অপর্যাপ্ত। ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে গবেষণা ও শিক্ষার্থীদের চাহিদা মেটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে কোনো বরাদ্দ আসে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বাড়ছে। অথচ ইউজিসি অনুদান কমিয়ে দিয়েছে। এটি অপ্রত্যাশিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয়। ফলে নিজস্ব তহবিল থেকে ঘাটতি মেটানো সম্ভব নয়। প্রতিবছর এভাবে ঘাটতি হতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য হবে।’ (প্রথম আলো, ২৫ জুন ২০২১)। তাহলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
গবেষণার ক্ষেত্রে প্রণোদনা কত গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝা যায় চীনকে দেখলে। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে পানির মতো অর্থ খরচ করেছে গবেষকদের নগদ প্রণোদনা দিতে, যখন তাঁদের গবেষণাকর্ম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সাময়িকীতে প্রকাশিত হতো। এর ফলাফল হাতেনাতে পাওয়া গেছে যখন চীন গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরের অবস্থানটি দখল করে নিয়েছে। এ মডেল অনুসরণ করছে এখন তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আরও অনেক দেশ। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার জন্য প্রণোদনা তো দূরের কথা, গবেষণাকাজ চালানোর জন্য সরকারের তরফ থেকে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ রুগ্ণ ও লিকলিকে।
আর প্রণোদনা দিলে যে কাজ হয়, এর প্রমাণ পাওয়া গেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ দেওয়া গবেষণা অনুদান প্রাপ্তির জন্য জমা পড়া প্রস্তাবনার সংখ্যা দেখে।
এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এই মানের বৈজ্ঞানিক গবেষক আছেন, সরকার উল্লিখিত অঙ্কের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করবে?
কিছুদিন আগে পাট থেকে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক, যার নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হাসিনা খান, অধ্যাপক রিয়াজুল ইসলাম এবং জিনপ্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর আগেই করোনার পেপটাইড টিকা তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন এবং এ–সংক্রান্ত গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল পিয়ার-রিভিউড আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃত (পাবমেড, স্কোপাস ইনডেক্সড) বৈজ্ঞানিক সাময়িকীতে প্রকাশ করেছিলেন। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও অর্থের সংকটে তিনি কাজটি আর এগিয়ে নিতে পারেননি, কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশে ইতিমধ্যে এ টাইপ টিকার ট্রায়াল শুরু হয়েছে। সারাহ গিলবার্ট আর তাঁর দল যে পরিমাণ আর্থিক সহায়তা পেয়েছে, মিজানুর রহমানের দল তার কানাকড়িও পাননি। হাসিনা খান, রিয়াজুল ইসলাম ও আফতাব উদ্দিনের এ গবেষণার কথা ঠিক কতটা মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছে জানি না, তবে সাধারণ মানুষ অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভানুধ্যায়ীদের কাছে যে খুব বেশি পৌঁছাতে পারেনি, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। দেশে একজন সরকারি আমলার নিয়মিত পদোন্নতিতে অথবা অপেক্ষাকৃত ক্ষমতাধর স্থানে পদায়নে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে অভিনন্দন আর স্তুতিবাক্যে ধন্য ধন্য পড়ে যায়, ক্রিকেটে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের সঙ্গে একটা ম্যাচ জিতলেও সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়, অথচ এ হতভাগা বিজ্ঞানীদের কপালে এসব অভিনন্দনের ছিটেফোঁটাও জোটে না।
গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরেকটি কাঠামোগত ব্যাপারে এবার আলোকপাত করতে চাই। বাংলাদেশ সরকার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অর্থ খরচ করলেও তা গবেষণার সঙ্গে একই সুতায় গাঁথতে ততটা সক্ষম হচ্ছে না। সরকার বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ বা ফেলোশিপ চালু করেছে, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। তবে এসব বৃত্তির আওতায় পিএইচডি করার দরকার তাঁদেরই বেশি, যাঁরা ভবিষ্যতে শিক্ষকতা অথবা গবেষণায় যুক্ত থাকবেন অথবা পিএইচডি গবেষণালব্ধ জ্ঞান সম্যকভাবে নিজেদের কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে প্রয়োগ করে গুণগত পরিবর্তন আনতে পারবেন। পিএইচডি কোনো এসএসসি, এইচএসসি বা অনার্সের মতো শিক্ষার একটি ধাপ নয়। পিএইচডি হলো স্বাধীন গবেষক হিসেবে কাজের জগতে প্রবেশ করার চাবি। অথচ বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের একটি অংশ সরকারের ফান্ড থেকে কোটি কোটি টাকার বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পিএইচডি করে দেশে এসে পিএইচডি গবেষণার ক্ষেত্র থেকে সম্পূর্ণ আলাদা কোনো ক্ষেত্রে কাজ শুরু করে। তাঁদের কজন পরবর্তী সময়ে গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন? পিএইচডির থিসিস জমা দিয়ে ডিগ্রিটা পাওয়া হয়ে যাওয়ার পর কজনের ব্যক্তিগত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়? অথচ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষকদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, যাঁরা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারেননি শুধু টাকার অভাবে। যাঁদের পিএইচডি করার দরকার সবচেয়ে বেশি তাঁরা শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছেন না আর অন্যদিকে কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে তাদের পেছনে যাদের গবেষণা করার ইচ্ছা বা প্রয়োজন কোনোটাই নেই। যেমন কোনো সরকারি কর্মকর্তা যদি পরিবেশবিজ্ঞান নিয়ে বিদেশ থেকে পিএইচডি করে এসে সিটি করপোরেশনে বসে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করতে অথবা কেউ মৎস্যসম্পদ নিয়ে পিএইচডি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন, তাহলে সরকারের অর্থের সুস্পষ্ট অপচয় হয়। পিএইচডি নামক ডিগ্রিটা থাকলে হয়তো সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরোত্তর জীবনে কোনো প্রকল্প বা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবে কাজের সুযোগ হয়, যা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে উপকারে আসে। কিন্তু চাকরিতে কর্মকালে জীবনে তাঁরা তাঁদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান কতখানি কাজে লাগাতে পারেন, তা নিয়ে একটি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের করার সময় এসেছে। পিএইচডি গবেষণার বিষয় অনুযায়ী সরকারের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থাতে সরকারি কর্মকর্তাদের পদায়ন হলে তাঁদের ব্যক্তিগত মঙ্গল না হলেও অন্তত দেশের মঙ্গল হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের শুধু মাস্টার্স আর ছাত্র-শিক্ষকদের মাস্টার্স এবং পিএইচডির জন্য আলাদা আলাদাভাবে বৃত্তির অর্থ বরাদ্দ করলে।
সরকারের পক্ষ থেকে গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ, তরুণ শিক্ষকদের বিদেশে পিএইচডির জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য নগদ প্রণোদনা দিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষক পদোন্নতির ক্ষেত্রে এ রকম গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি গ্রহণ করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শাফিউন নাহিন শিমুল র্যাঙ্কিং ও গবেষণার উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের করণীয় প্রসঙ্গে চমৎকার নিবন্ধ লিখেছেন ৩০ জুনের প্রথম আলোয়। তাই সেদিকে আর যাচ্ছি না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে শিক্ষকদের গবেষণার তালিকাটি হালনাগাদ করার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও গতিশীল করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষকই তাঁদের প্রকাশিত প্রবন্ধ এবং যুক্ত থাকা প্রকল্পের সংখ্যা সম্পূর্ণভাবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন না। এ নিবন্ধকার নিজে একই দোষে দুষ্ট, তাঁর প্রকাশিত ১০টি গবেষণা প্রবন্ধের মধ্যে মাত্র ৩টি প্রবন্ধ ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত আছে এবং বাকি প্রবন্ধগুলো গুগল স্কলার প্রোফাইলে সংযুক্ত আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না বলে বুলন্দ আওয়াজ তোলার আগে এর গবেষণা হয় না, নাকি এর খোঁজ রাখা হয় না; ভেবে নেওয়া দরকার। গবেষণা না হওয়ার যে রোগ, তা থেকে মুক্তির প্রার্থনাটা কোনো কর্তৃপক্ষ বরাবর করতে হবে, তা–ও দ্বিতীয়বার ভেবে নিতে হবে। অভিযোগ, সীমাবদ্ধতা, আর সমস্যার বয়ান শেষে সব পক্ষের আন্তরিকতায় সিক্ত কার্যকরী এক সমাধানযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে যাক উৎকর্ষের চূড়ান্ত সীমানায়; জন্মশতবর্ষের লগ্নে একটিই প্রার্থনা থাকল।
*লেখক: শিক্ষক, এমআইএস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে অধ্যয়নরত।