আচার বিক্রি করেই স্বাবলম্বী সামিরা সামছাদ।
আচার বিক্রি করেই স্বাবলম্বী সামিরা সামছাদ।

আচার ঘিরে সামিরার গল্প

সামিরা সামছাদের এবারের ঈদটা ছিল ‘একটু স্পেশাল’। কোরবানির পশু কেনায় বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে এবার প্রথম যুক্ত হয়েছে তাঁর উপার্জনের টাকাও। খুশিতে তিনি বলছিলেন, ‘কিছুদিন আগেও পরিবার থেকে হাতখরচের টাকা নিতাম। আজ আমিই কোরবানির গরু কেনায় শামিল হয়েছি। ভাবতেই যেন কেমন-কেমন লাগে!’

সামিরার এই স্বাবলম্বী হওয়ার পেছনে অবদান তাঁর নতুন উদ্যোগের। বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সামিরা। স্নাতক সমাপনী পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। এরই মধ্যে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আবার বগুড়ায় ফিরে আসেন তিনি। এরপর একসময় চাকরিতে ইস্তফা দেন। করোনাকাল তাঁর সামনে তখন খুলে দেয় উদ্যোক্তা হওয়ার দ্বার। সামিরা শুরু করেন অনলাইনে আচার বিক্রির ব্যবসা। উদ্যোগের নাম ‘ছায়াবৃক্ষ’। নিজে বাসায় আচার বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি শুরু করেন।

আচার বিক্রির অনলাইন প্ল্যাটফর্মের নাম ‘ছায়াবৃক্ষ’ কেন? হাসতে হাসতে সামিরা বলেন, ‘আচার দিয়ে শুরু করলেও আমার পরিকল্পনা অনেক বড়। ধীরে ধীরে অন্যান্য পণ্য নিয়েও কাজ করব। তাই এই নাম দিয়েছি। এই উদ্যোগে অন্যদেরও শামিল করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই।’

সামিরার ঝুলিতে আছে নানা পদের আচার। গরুর মাংসের আচার, মুরগির মাংসের আচার, রসুনের আচার, আমের টক-মিষ্টি মোরব্বাসহ আরও কয়েকটি পদ। জুনের মাঝামাঝিতে শুরু করে এখন পর্যন্ত তিনি দেড় লাখ টাকার আচার বিক্রি করেছেন। তাঁর বানানো আচার কিনেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। খেয়ে ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন ফেসবুকে।

উদ্যোক্তা হতে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ এবং সাহায্য পেয়েছেন মা-বাবার কাছ থেকে। বরাবরের মতো আশপাশের মানুষের সমালোচনা ছিল। সমালোচনাকারীদের নিয়ে সামিরার কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি ছায়াবৃক্ষের ছায়ায় নতুন পণ্য যুক্ত এবং কিছু মানুষের কর্মসংস্থান করার পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত।