বোর্ড পরীক্ষায় পাসের পর আনন্দের মুহুর্ত ধরে রাখছেন শিক্ষার্থীরা
বোর্ড পরীক্ষায় পাসের পর আনন্দের মুহুর্ত ধরে রাখছেন শিক্ষার্থীরা

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা, প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যেসব নিয়ম

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার আবেদন ফরম পূরণ শুরু হবে আগামী ২ মার্চ থেকে। ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী পরীক্ষার (টেস্ট পরীক্ষা) ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের জন্য নিয়মাবলি প্রকাশ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমান পরীক্ষা ২০২০ সাল এবং তৎপূর্ববর্তী বছরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ২০২৫ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা ২০১৯ এবং তৎপূর্ববর্তী বছরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ২০২৫ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

রেজিস্ট্রেশনের জন্য যা যা অনুসরণ করতে হবে শিক্ষার্থীদের

১.

রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ব্যতীত প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা ২০২৫ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫–এ অংশগ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রণীত পরীক্ষা পরিচালনার নিয়মাবলি প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের বেলায়ও প্রযোজ্য হবে।

২.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীকে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত নিম্নলিখিত যেকোনো একটি কলেজের মাধ্যমে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তবে শিক্ষক, পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীতে চাকরিরত ব্যক্তি এবং শারীরিক কিংবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রাইভেট পরীক্ষার্থীকে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে না।

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা প্রাইভেটে কেউ দিতে চাইলে করনীয় কি তা জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড

৩.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা যে কলেজের মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত বা রেজিস্ট্রেশন করবেন, সে কলেজের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। কোনো অবস্থাতেই কেন্দ্র পরিবর্তন করা যাবে না।

৪.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা কেবল মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও ইসলামি শিক্ষা শাখায় পরীক্ষা দিতে পারবেন। যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা আছে (তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যতিত) সে বিষয়/বিষয়সমূহ নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা চতুর্থ বিষয় গ্রহণ করতে পারবেন না।

৫.

বোর্ডের কোনো কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় নিজ বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে ইচ্ছা করলে নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশের অন্য যেকোনো বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

৬.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কলেজের অধ্যক্ষের নিকট ৬/১/২০২৫ থেকে ২০/০১/২০২৫ তারিখের মধ্যে প্রয়োজনীয় ফি এবং অন্য দলিলাদিসহ সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে।

৭.

প্রাইভেট প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর তালিকাভুক্তি ফি ১০০ টাকা মাত্র এবং ১২/০১/২০২৫ থেকে ৩০/০১/২০২৫ তারিখের মধ্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন (cSIF) করতে হবে। পূরণকৃত অনলাইন (cSIF) তালিকা এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সত্যায়িত করে ২/০২/২০২৫ তারিখের মধ্যে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মূল নম্বরপত্র তালিকার ক্রমানুসারে সাজিয়ে দিতে হবে।

ক. মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা পাসের মূল নম্বরপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি দাখিল করতে হবে। যে পরীক্ষার্থীরা ১৯৯৫ সালের আগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের মূল নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে এবং মূল নম্বরপত্রের অপর পৃষ্ঠায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক Verified and Found Correct লেখা থাকতে হবে। কোনোক্রমেই মাধ্যমিক পরীক্ষা বা সমমানের কোনো সনদ গ্রহণ করা হবে না।

খ. যে পরীক্ষার্থীরা কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের মূল নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে এবং মূল নম্বরপত্রের অপর পৃষ্ঠায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক Verified and Found Correct লেখা থাকতে হবে।

গ. যে পরীক্ষার্থীরা ১৯৯৯ সালের আগে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের মূল নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে এবং মূল নম্বরপত্রের অপর পৃষ্ঠায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক Verified and Found Correct লেখা থাকতে হবে।

ঘ. যে পরীক্ষার্থীরা ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয়েছেন এবং ২০১৬ বা তৎপূর্ববর্তী বছরে এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, তাঁদের মূল প্রবেশপত্র জমা দিতে হবে।

ঙ. বাংলাদেশের আওতাধীন অনুমোদিত কোনো কলেজের অধ্যক্ষ বা সেই বোর্ডের কোনো সদস্য অথবা কোনো সরকারি গেজেটেড অফিসারের নিকট হতে প্রার্থীর চরিত্র, আচরণ, প্রার্থিত পরীক্ষার অন্ততপক্ষে দুই বছর আগপর্যন্ত কোনো অনুমোদিত কলেজে শিক্ষার্থী ছিলেন না এবং প্রার্থী কোনো পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হননি অথবা হয়ে থাকলেও এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার জন্য অযোগ্য ঘোষিত হননি এ মর্মে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। অসত্য তথ্য প্রদান করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চ. প্রার্থীর সদ্য তোলা ২ (দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির সম্মুখভাগে নিজের নাম–স্বাক্ষর করতে হবে এবং তা সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত করে আঠা দিয়ে আবেদন ফরমে আটকিয়ে দিতে হবে।

ছ. শিক্ষক-প্রার্থীদের বেলায় কোনো অনুমোদিত বিদ্যালয়ে চাকরির মেয়াদ বিজ্ঞপ্তি জারির তারিখে অন্তত তিন বছর পূর্ণ হয়েছে এ মর্মে নিজ জেলা শিক্ষা অফিসারের সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।

জ. পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রার্থীদের বেলায় বিজ্ঞপ্তি জারির তারিখে কমপক্ষে এক বছর ধরে সক্রীয়ভাবে চাকরিতে আছেন মর্মে পুলিশ সুপার/কমান্ডিং অফিসারের সমপর্যায়ের কর্মকর্তার সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত সার্টিফিকেট দিতে হবে।

ঝ. কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধী কিংবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী শ্রুতলেখক (স্ক্রাইব) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালা মোতাবেক ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীকে শ্রুতলেখক (স্ক্রাইব) নিযুক্ত করতে হবে।

৮.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখা থেকে ১৬/০২/২০২৫ তারিখে গ্রহণ করতে হবে এবং ওই শাখা থেকে একই সঙ্গে PROBLEMATIC PRINT OUT সংশোধনের নিমিত্তে গ্রহণ করতে হবে।

৯.

PROBLEMATIC PRINT OUT প্রয়োজনীয় সংশোধন করে ২০/০২/২০২৫ তারিখে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হবে এবং ওই শাখায় যোগাযোগ করে ফরম পূরণের পূর্বে সংশোধিত অবশিষ্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড গ্রহণ করতে হবে।

১০.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষায় অবশ্যই অংশগ্রহণ করতে হবে। আবশ্যিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিসহ অন্য যেকোনো তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় ৩ ঘণ্টা।

১১.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার পূর্বে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মধ্যে নির্ধারিত কলেজের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ওই রেজিস্ট্রেশন শুধু ১ বছরের জন্য বলবৎ থাকবে।

১২.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের গৃহীত বিষয়সমূহ পাঠ্যসূচিতে উল্লিখিত গুচ্ছ মোতাবেক হতে হবে। গুচ্ছবহির্ভূত বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে পরীক্ষা বাতিল বলে গণ্য হবে।

১৩.

প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের নিকট পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে।

১৪.

নির্বাচিত প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা বোর্ডের পরীক্ষাসংক্রান্ত নিয়মাবলি মেনে চলতে বাধ্য থাকবে। কোনো কারণ না দেখিয়ে যেকোনো পরীক্ষার্থী আবেদন ফরম বাতিল করার ক্ষমতা বোর্ড সংরক্ষণ করে।

*যেসব কলেজে প্রাইভেট পরীক্ষা দেওয়া যাবে

১. কবি নজরুল সরকারি কলেজ, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা

২.সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা

৩. ভাষানটেক সরকারি কলেজ, কাফরুল, ঢাকা

৪. বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা

৫. সরকারি তোলারাম কলেজ, নারায়ণগঞ্জ

৬. সরকারি হরগঙ্গা কলেজ, মুন্সিগঞ্জ

৭. সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ

৮. ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ, গাজীপুর

৯. নরসিংদী সরকারি কলেজ, নরসিংদী

১০. গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ

১১. কুমুদিনী সরকারি কলেজ, টাঙ্গাইল

১২. নাগরপুর সরকারি কলেজ, নাগরপুর, টাঙ্গাইল

১৩. সরকারি ইয়াছিন কলেজ, ফরিদপুর

১৪. শরীয়তপুর সরকারি কলেজ, শরীয়তপুর

১৫. মাদারীপুর সরকারি কলেজ, মাদারীপুর

১৬. রাজবাড়ী সরকারি কলেজ, রাজবাড়ী

১৭. সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, গোপালগঞ্জ

১৮. শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আবুধাবি।

*বিস্তারিত দেখুন এখানে