নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা নেই, পরীক্ষা নেই, শিক্ষার্থীরা কিছু শিখছে না বলে যেসব কথা বলা হচ্ছে, সেটি ভুল তথ্য বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীরা এখন আগের চেয়ে বেশি পড়বে আর মূল্যায়ন হবে প্রতিটি কাজের। আবার অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক মূল্যায়নও হবে। কাজেই পরীক্ষা (মূল্যায়ন) ঠিকই থাকছে, কিন্তু পরীক্ষা–পরীক্ষার ভীতি থাকছে না।
আজ সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার প্রসঙ্গে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ১৫ ধরনের ‘ভুল তথ্য’ তুলে ধরে পাশাপাশি সেগুলোর ‘সঠিক ব্যাখ্যা’ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।
নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আমরা দেখছি, যাঁরা ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব আইডি থেকে এই প্রচারণা শুরু করেছেন এবং বিষয়টিকে এখন একটি আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁরা মূলত কোচিং ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নোট ও গাইড বই ব্যবসায়ীরা। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হলে ব্যবসায় মার খাবেন। সে কারণে তাঁরা নামছেন।’
অভিভাবকদের একাংশ বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়পর্যায়ে পড়ালেখার জন্য তাঁদের সন্তানেরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেন না। আর চাকরির ক্ষেত্রে তাঁদের সন্তানদের ফলাফল কাজে লাগবে না। এ বিষয়টি ভুল উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষার্থীরা যখন উচ্চমাধ্যমিক পাস করবেন, তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিপ্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন হবে। সেসব কার্যক্রমও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। চাকরির ক্ষেত্রেও পারদর্শিতার মূল্যায়নের ভিত্তিতেই নিয়োগ হবে। সেসব কার্যক্রমও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, যেকোনো পরিবর্তনই মেনে নিতে, খাপ খাইয়ে নিতে কষ্ট হয়। আর রূপান্তরকে মেনে নেওয়া আরও কষ্টকর। কিন্তু বুঝতে হবে এই রূপান্তর এগিয়ে যাওয়ার জন্য অবশ্যম্ভাবী। এর কোনো বিকল্প নেই। তাই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে নিজে যাচাই করা এবং সঠিক তথ্য জানার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী মহলের ফাঁদে পা দেবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।