এইচএসসির ফল শিগগিরই, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ফেব্রুয়ারির প্রথম-দ্বিতীয় সপ্তাহে খোলার পরিকল্পনা

এইচএসসি পরীক্ষার ফল বোর্ডে টানানো হয়েছে। তা দেখতে ভিড় করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা
প্রথম আলোর ফাইল ছবি

করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা নেওয়া ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের মূল্যায়নের ফল প্রকাশে সব আইনি বাধা কেটে গেছে। ফল প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট তিনটি আইন সংশোধনের গেজেট গত সোমবার প্রকাশিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলো এ মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছে।

এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ফেব্রুয়ারির প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে খোলার পরিকল্পনা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক ডেকেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

এইচএসসির ফল

২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত বছরের এপ্রিলে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই পরীক্ষা হয়নি। পরীক্ষার পরিবর্তে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনানুযায়ী, এসএসসি ও এইচএসসির সনদ দেওয়া হয় পরীক্ষার ভিত্তিতে। এ জন্য আইন সংশোধন করা হয়, যা গত সোমবার গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিনই ফল প্রকাশের জন্য সময় দেবেন, সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে। রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে, তাঁরা আশা করছেন এ মাসের মধ্যেই মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করতে পারবেন। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

স্কুল খুললে এমন শিক্ষা বিষয়ক নানা কার্যক্রম চলবে

বিশ্ববিদ্যালয় যখন খুলবে

একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কর্তৃপক্ষ খোলার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। সরকারের পরিকল্পনা হলো স্কুল-কলেজ খোলার পরে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল রয়েছে। তবে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষাগুলো নেওয়া যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের আইনে চলে। তাই খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জানান, ক্যাম্পাসে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৩১ জানুয়ারি ভার্চ্যুয়াল সভার আহ্বান করেছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা হয়। রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যসচিব এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের যেসব শিক্ষার্থীর হলের আবাসিকতা আছে, অগ্রাধিকারভিত্তিতে তাঁদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আবাসিক হলগুলোকে প্রস্তুত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আমির হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা পাওয়ার পরই তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারবেন। তাঁদের প্রস্তুতি নিতে খুব সময় লাগবে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, তাঁরা প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। পরিকল্পনা হলো, সপ্তাহে এক দিন একটি বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা। খোলার বিষয়ে আগামীকাল (বুধবার) ডিনদের সভা ডাকা হয়েছে।