সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে এই মুহূর্তে আরও ১৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি চালু করা যাবে আর আগামী তিন বছরের মধ্যে আরও এক হাজার বিদ্যালয়ে তা চালু করা যাবে। তবে এই কাজ হবে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, পর্যায়ক্রমে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমকি শিক্ষা পদক-২০২৩ এবং এ বছরের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধনের তথ্য জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব ফরিদ আহাম্মদ। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের ৬৯৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।
বর্তমানে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। ২০১০ সালে করা জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা বলা আছে। ছয় বছর পর ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যদিও সরকার সেটি বাস্তবায়ন করেনি।
জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে দীর্ঘদিন পর আবারও প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা বিভাগ। এর অংশ হিসেবে প্রথমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা হবে। এ জন্য আপাতত শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে তাদের অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক বা নামকাওয়াস্তে বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করবে। তিন বছর ধরে প্রস্তুতির পর সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
গত ৫ মে আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈতনিক পাঠদান কার্যক্রম ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করবে আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাব্যয় কমিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে কাজ করবে।
এ বিষয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব। এখানে দুটি বিষয়। একটি হলো প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করা। আরেকটি হলো শতভাগ অবৈতনিক করা। তাঁরা হিসেব করে দেখেছেন, ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫ হাজারের কাছাকাছি বিদ্যালয়ে যদি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা যায় এবং নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ২৩ হাজারের কাছাকাছি বিদ্যালয়ে যদি অবৈতনিক করা যায় তাহলে সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সচিব বলেন, এই কাজ করার জন্য তাদের কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো হলো অবকাঠামো, শিক্ষক নিয়োগ, পদ সৃষ্টি ও তাদের প্রশিক্ষণের চ্যালেঞ্জ।
তবে এগুলো ধারাবাহিক ও গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত বলে জানান সচিব।