শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, কোনো ইস্যু না পেয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে সরাতে কেউ কেউ নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের ওপর ভর করার চেষ্টা করছেন। তাদের নিয়ে করুণা করা যায়। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে তাঁরা যা বলছেন, তা মিথ্যাচার, সেটি মেনে নেওয়া যায় না।
সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
দীপু মনি বলেন, ‘কেউ কেউ বই না পড়ে, না দেখে কেউ একজন বলেছে তা শুনে অপরাজনৈতিক হিংসা, বিদ্বেষ নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন। তারা চায় যে এ সরকার না থাকুক। স্মার্ট বাংলাদেশ কী দরকার। তারা চায় পাকিস্তান। এ রকম একটি গোষ্ঠী বলছে, নতুন বইয়ে ইসলাম নেই, যা আছে ওটা ইসলামবিরোধী। আপনার আশপাশে ও এনসিটিবির ওয়েবসাইটে বই আছে আপনি দেখে নিন। চিলে কান নিয়ে গেছে আপনি তার পিছে না ছুটে নিজে দেখুন।’
দীপু মনি বলেন, যেগুলো ভুল এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, তা সংশোধন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। বাকি বইগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত আছে। সবাই মতামত দেন। যেসব মতামত যৌক্তিক, তা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবার কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ এবং আমি আনন্দিত এই জন্য যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ডগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশের মানুষ পাঠ্যবই পড়ছেন। আমি চাই, এটি তারা আরও সূক্ষ্মভাবে দেখুন। যত গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শ রয়েছে আমাদের দিক, আমরা খোলা মনে সব পরামর্শ বিবেচনা করব। যেখানে যৌক্তিক হবে, সেখানে পরিমার্জন, পরিশোধন, পরিশীলন করা হবে। এটি আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।’
দীপু মনি আরও বলেন, এবারের বইগুলো শিক্ষক, অভিভাবক-শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিয়ে করা হয়েছে। মানুষ তো, ভুল হতে পারে। ৩৫ কোটি বই ছাপা হয়, এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। গত বছর বিদ্যুতের সমস্যা ও কাগজের সংকট ছিল। প্রকাশকদের নিয়েও নানান ধরনের সমস্যা সমাধান করতে হয়েছে। যেখানে ভুল থাকবে, যেখানে ধরা পড়বে, তার সব যৌক্তিক ভুল সংশোধন করা হবে। কিন্তু যারা মিথ্যাচার করছেন, তা মেনে নেওয়া হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বাতিল করা একটি বইয়ের বর্ণপরিচয় থাকা একটি পৃষ্ঠার সঙ্গে আমার ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে যে আমি পৌত্তলিকতা শিখাচ্ছি। সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে জীবনের হুমকি দেওয়া হলে সেটি সামাজিকতা নয়। যেসব শিক্ষক সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে দিনের পর দিন কষ্ট করে বইগুলো সম্পাদনা করেন, তাঁদের যদি হুমকি দেওয়া হয়, তাঁদের আমি কী বলব। কোনো মিথ্যাচার ও অপপ্রচার সহ্য করা হবে না। যা যৌক্তিক, সঠিক, তা নিশ্চয়ই গ্রহণ করব।’
নবম-দশম শ্রেণির বই নিয়ে বিতর্ক তোলা হচ্ছে, তা ১০ বছর আগে তৈরি মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি গত ১০ বছর পরে ধরা পড়ছে। এটি দেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ সংশোধন করেছেন। তিন দফায় সেটি সংশোধন করা হলেও সেই ভুল রয়ে গেছে। সেটি এবার সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল সংবাদ প্রচার করার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।