ঢাবির আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে হিম উৎসব

প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে হিম উৎসব আয়োজিত হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এ হিম উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। ইনস্টিটিউটের চারটি বিভাগ ইংরেজি ভাষা, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ, জাপানিজ ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ আয়োজন উপলক্ষে রংবেরঙের সাজে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ভাষা মঞ্চকে সাজানো হয়েছিল।

উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল শিক্ষার্থীদের নিজেদের আয়োজনে শীতের পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রয়। তাঁরা নিজেদের হাতে তৈরি করা বিভিন্ন ধরনের পিঠার আসর বসিয়েছিলেন। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা থেকে শুরু করে শহরের ফাস্ট ফুড কিংবা স্ট্রিট ফুডও উঠে এসেছিল স্টলগুলোয়, যা ছিল আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের নিজেদের হাতে তৈরি করা। স্টলের উল্লেখযোগ্য পিঠাগুলোর মধ্যে ছিল ভাপা, পুলি, পাতা, ফুলঝুরি, গাজরের বরফি, হাতে কাটা সই, ঝিনুক, মুগ পাকনসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা। এ ছাড়া বিন্নি ধানের খই, বিভিন্ন ধরনের হালুয়া, আচার, ছিট রুটি, দই মালাই, জিলাপি, পিৎজা, বার্গার, ভেলপুরি, ফুসকাসহ অনেক ধরনের শীতকালীন খাবারের পসরা ছিল।

পিঠা-পায়েসের পাশাপাশি ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। হিমেল হাওয়ায় নাচ, গান আর কবিতায় মুখর হয়ে ওঠে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ। বাঙালি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অনেক বিদেশি (জাপানিজ, চীনা, রাশিয়ান, আমেরিকান, মালয়েশিয়ান, ফরাসি ইত্যাদি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও এই উৎসব দারুণভাবে উপভোগ করেছেন। হিম উৎসব বিদেশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ব্যাচেলর ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন দৃঢ় করতে এ আয়োজনকে সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে মেয়েরা রংবেরঙের শাড়ি পরে মাতিয়ে তুলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সিনিয়রদের কর্মকাণ্ডে খুবই মুগ্ধ হয়েছেন। সবার অনুপ্রেরণায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরাও সাজিয়েছিলেন বিভিন্ন ধরনের পিঠার স্টল। আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মনে করেন, শীত মানে প্রকৃতির নতুনত্ব, উৎসবের বর্ণাঢ্য রং ও পিঠাপুলির আয়োজন। এই হিম হিম শীত উপভোগ করতে নতুন বছরে হিম উৎসবের আয়োজনটি ছিল সবার জন্য খুবই আনন্দদায়ক।

লেখক: মাইফুল জামান ঝুমু, শিক্ষার্থী, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।