মানবিক গুণাবলি অর্জন ছাড়া শিক্ষার কোনো মূল্য নেই

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মানবিক গুণাবলি অর্জন ছাড়া শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। আপনি যত বড় শিক্ষিতই হোন না কেন, যদি মানুষের মতো মানুষ না হন, মানুষের বিপদে-আপদে এগিয়ে না আসেন, তাহলে সেই শিক্ষার কোনো মূল্য নেই।

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত বৈশাখী উৎসব ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র শিক্ষার্থীসহ সবাইকে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হওয়ার এ আহ্বান জানান। গতকাল শনিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুলিয়া ক্যাম্পাসের খেলার মাঠে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে গম্ভীরা, সংগীত, কৌতুক পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি ও নাটক-নাটিকা মঞ্চায়নের পাশাপাশি পিঠাপুলি, চটপটি-ফুসকা, আচারসহ বাঙালি ঐতিহ্যের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য এবং হস্ত ও কারুশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানস্থল পর্যন্ত সড়কটি আলপনা ও রংবেরঙের সাজে সাজানো হয়। গ্রামীণ বাংলার বৈশাখী আবহে স্থাপন করা হয় নাগরদোলা। আমন্ত্রিত অতিথি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও লোকজ ও বৈশাখী সাজে সজ্জিত ছিলেন। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুলিয়া ক্যাম্পাসের প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে এক টুকরা বাংলাদেশ।

সকালে জমকালো এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিকে একটি সমৃদ্ধ ট্রাস্ট উল্লেখ করেন তিনি। মানারাত ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সংখ্যা নয়, গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নিয়োগ দেওয়া হয় না। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম যিনি হন, তাঁকেই নিয়োগ দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, গুণগত শিক্ষা তখনই নিশ্চিত করতে পারব, যখন মানসম্পন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দেওয়া হবে। তাই আমরা গুণগত শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগে আপসহীন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যথাক্রমে উপস্থিত ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার, হাসুমণির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান বৈশাখী উৎসব বাঙালি জাতির সর্বজনীন উৎসব উল্লেখ করে বলেন, বৈশাখী উৎসবকে সর্বজনীন করার কারিগর হলেন প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলে বৈশাখী উৎসব ভাতা চালু করেন। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও বৈশাখী ভাতা চালু করে। মানারাতেও এ বছর প্রথম বৈশাখী ভাতা প্রদান করা হয়েছে। এ জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মোয়াজ্জম হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ফিতা কেটে বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। পরে তিনি বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

মধ্যাহ্নভোজের পর আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে গম্ভীরা, সংগীত, কৌতুক, কবিতা আবৃত্তি ও নাটক-নাটিকা পরিবেশন করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। বিজ্ঞপ্তি