স্কুলে স্কুলে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা দান শুরু

জরায়ুমুখ ক্যানসারে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ কর্মসূচিতে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি বা সমমান অধ্যয়নরত এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবহির্ভূত কিশোরীরা টিকা পাবে
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

জরায়ুমুখ ক্যানসারে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে উদ্বোধন হয়ে গেল স্কুল পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম। এ কর্মসূচিতে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি বা সমমান অধ্যয়নরত এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবহির্ভূত কিশোরীরা বিনা মূল্যে এইচপিভি টিকা পাবে।

বাংলাদেশ সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং গ্যাভির (গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমুনাইজেশন) সহযোগিতায় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত এ ভ্যাকসিন কার্যক্রম আজ রোববার রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাশাপাশি ঢাকা শহরের ১৩৮টি স্কুলে একযোগে শুরু হয়েছে। ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সংস্থাটির প্রাথমিক লক্ষ্য, প্রাথমিকভাবে শুধু ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্কুলে ২৩ লাখ কিশোরীকে টিকা প্রদান করা হবে।

রোববার ভিকারুননিসার অডিটোরিয়ামে টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।

টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আখতারুজ্জামান, ডিজিএইচএসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, ইউনিসেফ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রিয়াদ মাহমুদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রাজেন্দ্র বহরা।

ভ্যাকসিন কার্যক্রম আজ রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাশাপাশি ঢাকা শহরের ১৩৮টি স্কুলে একযোগে শুরু হয়েছে

মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রাণঘাতী এক রোগ। টিকার মাধ্যমে এ রোগ–প্রতিরোধ করা সম্ভব। ফলে দেশব্যাপী স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ টিকা কার্যক্রম শুরু হলো আজ। এইচপিভি টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এর সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও সম্পন্ন হয়েছে।’

আবুল বাসার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম বলেন, নারীদের সুরক্ষা দিতে এ কার্যক্রম। দেশজুড়ে ধাপে ধাপে সবাইকে এই টিকার আনা হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ছয় লক্ষাধিক নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ১১ জন জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন ৪ হাজার ৯৭১ জন। সংস্থাটির সুপারিশ অনুযায়ী নিয়মিত পরীক্ষা এবং এইচপিভি টিকা দানের মাধ্যমে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব।

এইচপিভি টিকা পেতে আগ্রহীদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে হবে www.vaxepi.gov.bd লিংকে।