আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে যৌথভাবে ‘অদম্য’ নামে তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট ও মালালা ফান্ড। ১৭ জুন কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি চলবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন মালালা ফান্ড বাংলাদেশের প্রতিনিধি মোশাররফ তানসেন, জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ প্রমুখ।
এ প্রকল্প পিছিয়ে পড়া মেয়েশিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার একটি প্রয়াস। জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, লিঙ্গবৈষম্যের মতো বিভিন্ন বাধা মোকাবিলা করে মেয়েদের ক্ষমতায়ন, অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যম গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য।
প্রকল্পের বিষয়ে জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ বলেন, ‘দেশে প্রায় ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ মেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় না। দারিদ্র্য, বৈষম্য ও পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে এর প্রায় অর্ধেকই ঝরে পড়ে। আমার বিশ্বাস, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হলে এটি মেয়েদের সঠিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছতে সহায়তা করবে।’
মালালা ফান্ড বাংলাদেশের প্রতিনিধি মোশাররফ তানসেন বলেন, ‘মালালা ফান্ড শিশু ও নারীদের গুণগত শিক্ষার আওতায় আনতে কাজ করে। সেই আলোকে মালালা ফান্ড ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ শুরু করেছে। আমরা চাই মেয়েরা জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীল হিসেবে গড়ে উঠবে। আমাদের অদম্য কর্মসূচির এটাই লক্ষ্য।’
মোশাররফ তানসেন আরও বলেন, ‘আমরা চর ও হাওর অঞ্চল বেছে নিয়েছি এই কর্মসূচির জন্য। জাগো ফাউন্ডেশন মিঠামইনে এ কাজের জন্য দায়িত্ব পেয়েছে। এখন জাগো ফাউন্ডেশন দুটি স্কুলে কাজ শুরু করেছে। তবে আমরা আশা করছি, সামনে আরও নয়টি স্কুল ও দুটি মাদ্রাসায় কাজ শুরু করবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের মতো সংগঠন, যারা আমাদের হাওর এলাকায় এসে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করছে—এমন দৃষ্টান্ত বিরল। জাগো ফাউন্ডেশন ও মালালা ফান্ড আমাদের মেয়েশিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করছে। হাওর এলাকায় যারা ঝরে পড়ছে, তাদের নিয়ে কাজ করছে। এভাবে আমাদের শিক্ষার উন্নয়নে ও জাতি গঠনে তারা ভূমিকা রাখছে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
স্থানীয় ঘাগড়া আঘাগড়া আ. গণি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকল্পটি নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। আমার মতে, এটি আমাদের ছাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। প্রকল্পটি দারিদ্র্য, বিভেদের মতো সীমাবদ্ধতা ভেঙে দিয়ে একটি অনুকূল এবং সহায়ক শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করবে। এর ফলে আমাদের মেয়েরা হবে স্বাবলম্বী। পৌঁছাবে উচ্চতার নতুন শিখরে।’