ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: খেলোয়াড় কোটায় ভর্তিতে দিতে হবে মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবার আনুষ্ঠানিক নীতিমালার আওতায় স্নাতক প্রথম বর্ষে (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম) খেলোয়াড় কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এটি কার্যকর হবে। খেলোয়াড় কোটায় এত দিন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ছিল না।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, খেলোয়াড় কোটায় আবেদনকারীদের অন্য প্রার্থীদের মতো ইউনিটভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে না। তাঁদের দিতে হবে মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা। তবে কতজনকে নেওয়া হবে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলার মানোন্নয়ন, মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য দক্ষ ক্রীড়াবিদ তৈরির লক্ষ্যে খেলোয়াড় কোটায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের আগামীকাল বুধবার থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সনদসহ সাদা কাগজে সংশ্লিষ্ট ভর্তি পরীক্ষার ইউনিটপ্রধান বরাবর আবেদন করতে হবে। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে প্রার্থীদের সরাসরি মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে ভর্তির সুপারিশ করা হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের জাতীয় দলের বর্তমান খেলোয়াড় হতে হবে। এ ছাড়া প্রার্থীদের বিগত তিন বছরের মধ্যে জাতীয় দল, জাতীয় এ দল এবং বয়সভিত্তিক অনূর্ধ্ব ২৩, ২০, ১৯, ১৭ কিংবা ১৬ দলের সদস্য হয়ে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হবে। অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, সাঁতার, টেনিস, দাবা, ক্যারমসহ বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় জাতীয় র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ১ থেকে ৫-এর মধ্যে থাকা প্রার্থীরাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের আগামীকাল বুধবার থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সনদসহ সাদা কাগজে সংশ্লিষ্ট ভর্তি পরীক্ষার ইউনিটপ্রধান বরাবর আবেদন করতে হবে। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে প্রার্থীদের সরাসরি মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে ভর্তির সুপারিশ করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবেদনের শেষ তারিখে ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের বয়স অনূর্ধ্ব ২৩ বছর হতে হবে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিটভিত্তিক ভর্তির ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক প্রার্থীদের ভর্তিবিষয়ক বিস্তারিত তথ্যের জন্য কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ক্ষেত্রে কলা অনুষদের ডিন কার্যালয়, বিজ্ঞান ইউনিটের ক্ষেত্রে আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন কার্যালয়, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ক্ষেত্রে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন কার্যালয় এবং চারুকলা ইউনিটের ক্ষেত্রে চারুকলা অনুষদের ডিন কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া ভর্তিবিষয়ক বিস্তারিত তথ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ও ক্রীড়া কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সামাদ প্রথম আলোকে বলেন, আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলোয়াড় কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালার আওতায় করা হতো না। নীতিমালা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে ভর্তিতে অনিয়ম হতো। খেলোয়াড় না হয়েও নানাভাবে জাতীয় দলের সনদ নিয়ে এসে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যেতেন। এবার এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক নীতিমালা করা হলো, যার মধ্য দিয়ে খেলোয়াড় কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

নতুন এই নিয়মের ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভালো খেলোয়াড় পাবে এবং বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ভালো করতে পারবে বলে মনে করেন মুহাম্মদ সামাদ। খেলোয়াড় কোটায় কত শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে, সেই বিষয়ে নীতিমালায় সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এবারই প্রথমবার, তাই আগে দেখা হবে কী পরিমাণ শিক্ষার্থী এই কোটায় ভর্তির জন্য আবেদন করেন।’