বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন শুরু, প্রতি শাখায় শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫৫

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) থেকে। অনলাইনে এই আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম চলবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

মাউশির সূত্র মতে, আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে ২২ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থী বাছাইয়ে ডিজিটাল লটারি করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২৬ নভেম্বর এই লটারি হতে পারে।

অনলাইনে আবেদন করতে হবে https://gsa.teletalk.com.bd ঠিকানায়। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা, যা শুধু টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে দিতে হবে। প্রতিটি আবেদনে পছন্দের ক্রমানুসারে শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয়ের নাম দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পালায় (ডাবল শিফট) চলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় পালা পছন্দক্রমে দিলে দুটি পছন্দক্রম বলে বিবেচিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহানগর ও জেলা সদর উপজেলায় অবস্থিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষের (২০২৪) জন্য প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ছয় বছরের বেশি। আর প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৫৫ জন।

ঢাকা মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়–সংলগ্ন ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়ার’ (বিদ্যালয় নির্ধারিত স্কুল সেবা অঞ্চল) শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। বেসরকারি বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়–সংলগ্ন তিনটি প্রশাসনিক থানা ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে নির্ধারণ করবে। আর সরকারি বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এটি করার দায়িত্বে।

বেসরকারি বিদ্যালয়ে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সাকল্যে মফস্‌সল এলাকায় ৫০০ টাকা, পৌর এলাকায় (উপজেলা) এক হাজার, পৌর এলাকা (জেলা সদর) দুই হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মহানগর এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না।

ঢাকা মহানগর এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত (বেতন বাবদ সরকারি অনুদান) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার অতিরিক্ত আদায় করা যাবে না। তবে ঢাকা মহানগর এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ, উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে ৮ হাজার টাকা এবং ইংরেজি সংস্করণে ১০ হাজার টাকা নেওয়া যাবে। কিন্তু উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না।

একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এক শ্রেণি থেকে পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনঃ ভর্তির ফি নেওয়া যাবে না। ভর্তির ফি বাবদ সরকার নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা যাবে না। তা করলে সরকার এমপিও বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের জন্য ভর্তিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা নিয়ে সংশ্লিষ্ট হিসাব তহবিলে জমা দিতে হবে। এর মধ্যে ৭০ টাকা অবসর ও ৩০ টাকা কল্যাণ তহবিলের সংশ্লিষ্ট হিসাব খাতে জমা দিতে হবে।

প্রতিবারই বছরের শেষ সময়ে এসে পরবর্তী বছরের ভর্তির প্রক্রিয়া চলে। ভর্তি শেষে জানুয়ারিতে ক্লাস শুরু হয়। আগে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির কাজটি হতো লটারির মাধ্যমে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর পর থেকে একই প্রক্রিয়ায় ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হচ্ছে।