প্রকৌশল গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এবার এককভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)। স্নাতক প্রথম বর্ষ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদনসহ ভর্তির বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি (প্রাক্–নির্বাচনী, এমসিকিউ) এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি।
স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি এবং তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা কয়েক বছর ধরে গুচ্ছপদ্ধতির মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এবার প্রথমে কুয়েট, পরে চুয়েট এককভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা চেয়েছিলেন গুচ্ছ পদ্ধতিতেই পরীক্ষা নিতে। এটা নিতে পারলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভোগান্তি কমে। কিন্তু তাঁদের বাধ্য হয়েই এককভাবে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২১ অথবা ২০২২ সালের মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ অথবা সমতুল্য গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ও ইংরেজি বিষয়ের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপি ৪.০০সহ মোট ন্যূনতম জিপি ১৮.০০ পেতে হবে।
প্রার্থী GCE ‘O’ লেভেল এবং ‘A’ লেভেল পরীক্ষায় পাস করে থাকলে তার ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য GCE ‘O’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘B’ গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে। GCE ‘A’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে পৃথক পৃথকভাবে কমপক্ষে ‘B’ গ্রেড পেয়ে পাস হতে হবে। উল্লেখ্য, প্রার্থীকে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর বা তারপরে ‘A’ লেভেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত সব বৈধ আবেদনপত্রের মধ্য হতে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ও ইংরেজি—এ চার বিষয়ে প্রাপ্ত মোট গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতে একটি মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। প্রার্থী সংখ্যা বেশি হলে এ তালিকা থেকে প্রথম ২৪ হাজার জন প্রার্থীকে প্রাক্-নির্বাচনী ((MCQ) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে ২৪ হাজারতম প্রার্থী একাধিক হলে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় যথাক্রমে গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থী সংখ্যা চূড়ান্ত করা হবে।
এই শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের সর্বোচ্চ তিন শিফটে বিভক্ত করে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি শিফটে প্রার্থীদের উপস্থিতির আনুপাতিক হারে পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচনী পরীক্ষার জন্য যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
নির্বাচনী (লিখিত) পরীক্ষাতে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পুরকৌশল, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল এবং যন্ত্রকৌশল অনুষদসমূহের মোট ১৪টি বিভাগে সংরক্ষিত ৫টিসহ মোট ১ হাজার ২৩৫টি আসন রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ নিয়ে ‘ক’ গ্রুপ; ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ নিয়ে ‘খ’ গ্রুপ গঠিত।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ২০২৪ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের ওপর লিখিত পদ্ধতিতে ‘ক’ গ্রুপের জন্য ৩৫০ নম্বরের এবং ‘খ’ গ্রুপের জন্য ৩৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি অতিরিক্ত মুক্তহস্ত অঙ্কনের ১০০ নম্বরসহ মোট ৪৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় সময় থাকবে আড়াই ঘণ্টা। তবে অতিরিক্ত মুক্তহস্ত অঙ্কনের জন্য পরীক্ষায় বাড়তি ১ ঘণ্টা দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রাক্–নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১০০ নম্বরে। প্রতিটি ভুলের জন্য ২৫ শতাংশ নম্বর কাটা হবে। পরীক্ষার সময় থাকবে ১ ঘণ্টা।
গ্রুপ ‘ক’ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ- এ আবেদনের ফি ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং গ্রুপ ‘খ’ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ-এ ১ হাজার ৪৫০ টাকা। প্রাক্-নির্বাচনী পরীক্ষায় পরে নির্বাচনী (লিখিত) পরীক্ষায় যোগ্য না হলে শিক্ষার্থী কিছু টাকা চার্জ বাদে ফেরত পাবেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।