মেডিকেল কলেজগুলোয় এ বছর এমবিবিএসে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে অনলাইনে আবেদন চলছে। আবেদন চলবে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে ২৪ জানুয়ারি রাত ১২ পর্যন্ত। প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। আর ভর্তি পরীক্ষা ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় শুরু হয়ে শেষ হবে বেলা ১১টায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ২০২৩ সালে এইচএসসি, ‘এ’লেভেল বা সমমান ও ২০২১ সালে এসএসসি, ‘ও’ লেভেল বা সমমান অথবা ২০২২ সালে এইচএসসি, ‘এ’লেভেল বা সমমান ও ২০২০ সালে এসএসসি, ‘ও’ লেভেল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। তবে প্রার্থীকে এইচএসসি, ‘এ’ লেভেল বা সমমান পরীক্ষায় পাসের পূর্ববর্তী ২ বছরের মধ্যে এসএসসি, ‘ও’ লেভেল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
*এসএসসি, ‘ও’ লেভেল বা সমমান এবং এইচএসসি, ‘এ’ লেভেল বা সমমান দুটি পরীক্ষায় জিপিএ কমপক্ষে ৯ থাকতে হবে। উপজাতীয় ও পার্বত্য জেলার অ-উপজাতীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি, ‘ও’ লেভেল বা সমমান এবং এইচএসসি, ‘এ’ লেভেল বা সমমান পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৮ হতে হবে। তবে এককভাবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ–৩.৫০-এর কম হলে আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
*সব আবেদনকারীর জন্য এইচএসসি/এ লেভেল/সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে ন্যূনতম গ্রেড পয়েন্ট ৪.০ না থাকলে আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।
লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটি ১ নম্বর করে মোট (এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী) ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়ভিত্তিক বিভাজন পদার্থবিদ্যা ২০, রসায়নবিদ্যা ২৫, জীববিজ্ঞান ৩০, ইংরেজি ১৫ ও সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ) ১০ অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।
লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
টেলিটক প্রিপেইড সিমের মাধ্যমে এক হাজার টাকা জমা দিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে প্রার্থীদের। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার জন্য অনলাইন ফরম পূরণের নিয়ম ও ভর্তি–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য টেলিটকের ওয়েবসাইট (http://dgme.teletalk.com.bd), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ওয়েবসাইট (www.mefwd.gov.bd), স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dgme.gov.bd) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dghs.gov.bd) থেকে জানা যাবে। আবেদনপত্র পূরণের আগে কিছু তথ্য জেনে রাখতে হবে। সেগুলো হলো—
১. 300 x 300 পিক্সেল মাপের আবেদনকারী প্রার্থীর একটি রঙিন ছবি (jpg) আপলোড দিতে হবে। ফাইলের সাইজ 100kb–এর বেশি হবে না। (ছবি স্ক্যান করা অথবা ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা।)
২. 300 x 80 পিক্সেল মাপের স্ক্যান করা নিজের একটি স্বাক্ষর (jpg)। ফাইলের সাইজ 60kb–এর বেশি হবে না।
৩. এ দুটি উপকরণ কম্পিউটার বা পেনড্রাইভে রেখে দিতে হবে।
৪. ইংরেজিতে নিজের জেলা, বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা লিখিতভাবে নিজের কাছে সংরক্ষণ করতে হবে।
৫. ভর্তি–ইচ্ছুক মেডিকেল কলেজগুলোর নাম নিজের পছন্দের ক্রমানুসারে সাজিয়ে লিখতে হবে। কারণ, পছন্দক্রম একবার দেওয়ার পর আর পরিবর্তন করা যাবে না।
এসব তথ্য ও উপকরণ সঙ্গে থাকলে টেলিটকের ওয়েবসাইট (http://dgme.teletalk.com.bd) এ গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। ছবি ও স্বাক্ষর আপলোডের পর User ID নম্বর দেখা যাবে। সেই পৃষ্ঠা অবশ্যই প্রিন্ট করে রাখতে হবে।
*অনলাইনে আবেদন শুরু: ১১ জানুয়ারি, সকাল ১০টা;
*অনলাইনে আবেদন শেষ: ২৩ জানুয়ারি, রাত ১১টা ৫৯ মিনিট;
*অনলাইনে আবেদন ফি জমার শেষ দিন: ২৪ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট;
*প্রবেশপত্র বিতরণ: ৫-৭ ফেব্রুয়ারি (ডাউনলোড রঙিন প্রিন্ট)
*ভর্তি পরীক্ষা: ৯ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা–সংক্রান্ত সভা শেষে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে আসন বাড়ানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ১ হাজার ৩০টি আসন বেড়েছে। এর ফলে এবার সরকারি মেডিকেল কলেজে ৫ হাজার ৩৮০ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন। এ ছাড়া বেসরকারি মেডিকেলের জন্য আসন রয়েছে ৬ হাজার ৩৪৮টি। আর্মি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জন্য ৩৭৫টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।
এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম নম্বর (পাস নম্বর) গতবারের মতো এবারও ৪০ রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশনের সময় তিনবার পাবেন শিক্ষার্থীরা। বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য সব কলেজকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা সব কলেজে চয়েজ একবারে দিতে পারবেন, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতেও একই নিয়ম বহাল।
২৪ ডিসেম্বরের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুকদের ১০ নম্বর কাটা হবে। এ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় জেলা কোটা বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্ধারিত সময়ে আসন পূরণ করা না গেলে সেসব আসনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, অনেকেই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেন। পরবর্তী সময় ভালো কোথাও ভর্তির সুযোগ পেলে আগের আসনটি ফাঁকা হয়ে যায়। এতে সরকারের অর্থ অপচয় হয়। এ বিষয়ে কঠোরতার জন্য মেডিকেল ও ডেন্টালে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুকদের ১৫ নম্বর কাটা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে সবার পরামর্শে ১০ নম্বর কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় নিরুৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি নেই, এমন শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুকদের জন্য আগের মতো ৫ নম্বর কাটার সিদ্ধান্ত বহাল আছে।
জানা গেছে, মেডিকেলের মোট আসনের ২০ শতাংশ বরাদ্দ থাকে জেলা কোটায় আবেদন করা শিক্ষার্থীদের জন্য। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এ সুযোগ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
*মেডিকেল ভর্তি বিজ্ঞপ্তিটি দেখুন এখানে