যেভাবে হবে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার্থীর তালিকা

ফাইল ছবি

গুচ্ছ ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পরীক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে আবেদন থেকে ৬টি ক্রাইটেরিয়া ক্রমানুসারে ব্যবহার করে চূড়ান্ত মেধাক্রম প্রস্তুত করা হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রথমে এসএসসি ও এইচএসসির প্রাপ্ত জিপিএ ও নম্বর, বিজ্ঞান শাখার এইচএসসিতে যথাক্রমে পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ে জিপিএ ও নম্বর এবং মানবিক ও বাণিজ্য শাখার ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ ও নম্বর, এইচএসসিতে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে জিপিএ ও নম্বর ব্যবহার করে মেধাক্রম প্রস্তুত করতে হবে।

গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (gstadmission.org) প্রকাশিত এক নির্দেশিকায় এ তথ্য জানানো হয়।

নির্দেশিকায় বলা হয়, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রথমে এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ থেকে ৬০ শতাংশ এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ থেকে ৪০ শতাংশ স্কোর রাখতে হবে। এরপর এইচএসসি পরীক্ষার নম্বরে ৬০ শতাংশ ও এসএসসি পরীক্ষার নম্বরে ৪০ শতাংশ স্কোর ধরা হবে। ক্রমান্বয়ে এসএসসিতে পদার্থবিজ্ঞানে গ্রেড পয়েন্ট ও নম্বর এবং এইচএসসিতে রসায়নে গ্রেড পয়েন্ট ও নম্বর ক্রমানুসারে ব্যবহার করে প্রাথমিক আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। একইভাবে বাণিজ্য ও মানবিক শাখার ক্ষেত্রেও প্রথমে এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ থেকে ৬০ শতাংশ এবং এসএসসি পরীক্ষার জিপিএ থেকে ৪০ শতাংশ স্কোর ধরা হবে। এরপর এইচএসসি পরীক্ষার নম্বর থেকে ৬০ শতাংশ ও এসএসসি পরীক্ষার নম্বর থেকে ৪০ শতাংশ স্কোর ধরা হবে। এরপর ক্রমান্বয়ে এসএসসিতে বাংলায় গ্রেড পয়েন্ট ও নম্বর এবং এইচএসসি ইংরেজি বিষয়ে গ্রেড পয়েন্ট ও নম্বর ক্রমানুসারে ব্যবহার করে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শেষে এভাবেই ফেরন শিক্ষার্থীরা। ভেতরে জায়গা না পেয়ে ঝুঁকি নিয়েই ট্রেনের ছাদে করে গন্তব্য ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। তবে গুচ্ছ পরীক্ষার কারণে এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা

নির্দেশিকায় আরও বলা হয়, প্রতিটি ইউনিটে সর্বোচ্চ দেড় লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রতিটি ইউনিটে আবেদন ফি ৫০০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ, রকেট, নগদ) মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে চূড়ান্ত আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় পরবর্তী মেধাক্রম থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে। চূড়ান্ত আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের ৩১টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ন্যূনতম ৫টি কেন্দ্র পছন্দের তালিকায় রাখতে হবে। নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্র পরিবর্তনের কোনো সুযোগ পাবেন না।

শিক্ষার্থীদের আগামী ১৯ জুন মানবিক বিভাগ (A ইউনিট), ২৬ জুন বাণিজ্য বিভাগ (B ইউনিট) এবং ৩ জুলাই বিজ্ঞান বিভাগের (C ইউনিট) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী তাঁর এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার বিভাগসংশ্লিষ্ট (বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য) একটিমাত্র ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে গুচ্ছভুক্ত যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাবেন। শিক্ষার্থীদের দুই পর্যায়ে আবেদন করতে হবে। প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন ১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত, প্রাথমিক আবেদনের ফলাফল প্রকাশ হবে ২৩ এপ্রিল। চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে ২৪ এপ্রিল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত এবং প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে ১ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত।

প্রাথমিক আবেদন ও যোগ্যতা

২০১৬ হতে ২০১৮ সালের এসএসসি বা সমমান এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালের এইচএসসি বা সমমান, ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল), A লেভেল এবং অন্যান্য সমমান পরীক্ষায় (সমমান নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাই কেবল ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান শাখা থেকে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সাপেক্ষে যথাক্রমে A, B ও C ইউনিটে আবেদন করতে পারবেন।

মানবিক শাখা (A ইউনিট) থেকে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫–সহ মোট জিপিএ ৭ থাকতে হবে। বাণিজ্য শাখা (B ইউনিট) থেকে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫–সহ মোট জিপিএ ৭.৫ থাকতে হবে। বিজ্ঞান শাখা (C ইউনিট) থেকে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫–সহ মোট জিপিএ ৮ থাকতে হবে।

O লেভেল পরীক্ষায় পাঁচটি বিষয়ে এবং A লেভেল পরীক্ষায় অন্তত দুটি বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং উভয় লেভেলে মোট সাতটি বিষয়ের মধ্যে চারটি বিষয়ে কমপক্ষে B গ্রেড এবং তিনটি বিষয়ে কমপক্ষে C গ্রেড থাকতে হবে। তবে সরাসরি আবেদনের মাধ্যমে সমমান ও যোগ্যতা নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। O লেভেল, A লেভেল এবং ইংলিশ ভার্সন (ন্যাশনাল কারিকুলাম) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের প্রশ্নপত্র প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হবে। ইংরেজি প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক প্রার্থীকে চূড়ান্ত আবেদনের সময় তা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

২০ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হবে

ভর্তি পরীক্ষার নম্বর ও ফলাফল

নির্ধারিত কেন্দ্রে প্রতিটি ইউনিটে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যেকোনো ইউনিটের (A, B, C) পরীক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদত্ত শর্ত সাপেক্ষে অন্যান্য ইউনিট–সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবেন।

ভর্তি পরীক্ষায় মানবিক শাখায় বাংলা ৪০, ইংরেজি ৩৫ এবং আইসিটিতে ২৫ নম্বর; বাণিজ্য বিভাগে হিসাববিজ্ঞান ২৫, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২৫, বাংলা ১৩, ইংরেজি ১২ এবং আইসিটিতে ২৫ নম্বর। বিজ্ঞান বিভাগে আবশ্যিক পদার্থবিদ্যা ২০, রসায়ন ২০, বাংলা ১০, ইংরেজি ১০ ও ঐচ্ছিক হিসেবে গণিত, জীববিদ্যা বা আইসিটি যেকোনো ২টি বিষয়ে ৪০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে।

বিজ্ঞান বিভাগে ঐচ্ছিক হিসাবে গণিত ও জীববিদ্যা বিষয়ের উত্তর দিলে বিজ্ঞান শাখাসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে। জীববিদ্যা ও আইসিটি বিষয়ের উত্তর দিলে শুধু বায়োলজিক্যাল সায়েন্স (যেমন উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা ইত্যাদি), অ্যাগ্রিকালচার, বায়োকেমিক্যাল সায়েন্স (যেমন ফার্মেসি, বায়োকেমিস্ট্রি ইত্যাদি) বিষয়গুলোতে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে। গণিত ও আইসিটি বিষয়ের উত্তর প্রদান করলে উল্লেখিত বিষয়গুলো ব্যতীত বিজ্ঞান শাখাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে। এ–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যসংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম প্রস্তুত করে (gstadmission.org) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। গুচ্ছভুক্ত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় আলাদাভাবে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিজেদের শর্ত উল্লেখসহ দরখাস্ত আহ্বান করবে। ইউনিটভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।