ঢাবিতে ভর্তি আবেদন শুরু, মানতে হবে কয়েকটি নির্দেশনা

ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের উৎকণ্ঠিত অভিভাবকেরা
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি আবেদন শুরু আজ সোমবার থেকে। আজ বিকেল চার টা থেকে শুরু হয়েছে। অনলাইনে এ আবেদন চলবে ৩১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। আগামী ২১ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত পাঁচটি ইউনিটের অধীনে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনলাইনের মাধ্যমে প্রার্থীদের ভর্তির আবেদনপ্রক্রিয়া ৮ মার্চ বিকেল চারটা থেকে শুরু হবে এবং ৩১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ১ এপ্রিল রাত ১১টা ৫৯মিনিট পর্যন্ত। ভর্তি পরীক্ষা হবে ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে।

শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা

এবার শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
*শিক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের তথ্য, বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর এবং মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লাগবে
*আট বিভাগীয় শহরের যেকোনো একটিকে শিক্ষার্থীর তাঁর ভর্তি কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিতে হবে
*স্ক্যান করা ছবি লাগবে একটি
*এসএমএস করার জন্য শিক্ষার্থীর টেলিটক, রবি, এয়ারটেল অথবা বাংলালিংক যেকোনো অপারেটরের একটি মোবাইল ফোন নম্বর থাকতে হবে
*ভর্তির আবেদন ফি তাৎক্ষণিক অনলাইনে (ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং) বা চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জমা দিতে হবে।
*এ-লেভেল/ও-লেভেল/সমমান বিদেশি পাঠ্যক্রমে বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সমতা নিরূপণের জন্য admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘সমমান আবেদন’ বা Equivalence Application মেন্যুতে আবেদন করে তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
*সমতা নিরূপণের পর প্রাপ্ত Equivalence ID ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো তাঁরা একই ওয়েবসাইটে লগইন করে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক বা সমমান এবং ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা ঢাবির বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তির জন্য নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে পারবেন, তাঁরাই স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। ইন্টারনেটর সুবিধাসংবলিত কম্পিউটার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন ওয়েবসাইটের (https://admission.eis.du.ac.bd) মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

সব ইউনিটের জন্য সাধারণ নিয়মাবলি

*IGCSE/O Level এবং IAL/GCE A Level প্রার্থীর ক্ষেত্রে: ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত IGCSE/O Level পরীক্ষায় অন্তত পাঁচটি বিষয়ে এবং ২০২০ সালের ফল প্রকাশিত IAL/GCE A Level পরীক্ষায় অন্তত দুটি বিষয়ে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের IGCSE/O Level এবং IAL/GCE A Level মোট সাতটি বিষয়ের মধ্যে যথাক্রমে চারটি বিষয়ে কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড ও তিনটি বিষয়ে কমপক্ষে ‘সি’ গ্রেড থাকতে হবে।

*সমমানের বিদেশি সার্টিফিকেট/ডিপ্লোমাধারী প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানের অনুমতি সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবেন। তবে সংশ্লিষ্ট অনুষদ কর্তৃক সমতা নিরূপিত হলেই কেবল তাঁরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ ছাড়া সব প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট ইউনিট কর্তৃক নির্ধারিত অন্য শর্ত পূরণ করতে হবে।

কোটায় ভর্তির শর্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর ওয়ার্ড কোটা (কেবল ছেলে/মেয়ে/স্বামী/স্ত্রী) উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী (দৃষ্টি, বাক্, শ্রবণ ও শারীরিক) ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/মুক্তিযোদ্ধার নাতি/নাতনিসহ, খেলোয়াড় (শুধু বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বিকেএসপি থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের) কোটায় ভর্তি প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের সাত দিনের মধ্যে ওই ইউনিটের ডিন অফিস থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র প্রদর্শনপূর্বক নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
* ওয়ার্ড কোটার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধানের প্রত্যয়নপত্রসহ;
* উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে নিজ নিজ উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রধান/জেলা প্রশাসকের সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ;
* হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় কোটার ক্ষেত্রে হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় সংগঠনের প্রধানের সনদপত্রসহ;
* প্রতিবন্ধী কোটার (দৃষ্টি, বাক্‌, শ্রবণ ও শারীরিক) ক্ষেত্রে সঠিকতার সনদপত্রসহ;
* মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/মুক্তিযোদ্ধার নাতি/নাতনিসহ কোটার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদপত্র অথবা ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্রসহ;
*খেলোয়াড় কোটায় শুধু বিকেএসপি থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষা আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক সনদপত্র প্রাপ্ত হতে হবে।
উপরিউক্ত কোটার নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে তা যথাযথভাবে পূরণ করে যে কোটায় ভর্তি হতে ইচ্ছুক, তার প্রত্যয়নপত্র/সনদপত্র/ প্রমাণপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিটের প্রধানের অফিসে জমা দিতে হবে।
যাঁদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদ নেই, কিন্তু সনদের জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। তবে ভর্তির জন্য চূড়ান্ত নির্বাচনের আগে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদপত্র জমা দিতে হবে।

পরীক্ষার তারিখ ও সময়

আগামী ২১ মে (শুক্রবার) বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিট, ২২ মে (শনিবার) কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিট, ২৭ মে (বৃহস্পতিবার) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিট, ২৮ মে (শুক্রবার) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিট ও ৫ জুন (শনিবার) চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘চ’ ইউনিটের (অঙ্কন) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ জুন (শনিবার)। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষার সময় ও নম্বর বণ্টন

‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ৪৫ মিনিটে এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ৪৫ মিনিটে দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। তবে ‘চ’ ইউনিটের তত্ত্বীয় পরীক্ষার ৪০ নম্বরের জন্য ৩০ মিনিট আর লিখিত ৬০ (অঙ্কন) নম্বরের পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে।

পরীক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সব ইউনিটের ভর্তি–ইচ্ছুক প্রার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসংবলিত ঘড়ি ও কলম ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ভর্তি-নির্দেশিকায় উল্লেখ নেই—ভর্তিসংক্রান্ত এমন কোনো তথ্য জানতে হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিট কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

সমতা নিরূপণের জন্য

এ-লেভেল/ও-লেভেল/সমমান বিদেশি পাঠক্রমে বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সমতা নিরূপণের জন্য https://admission.eis.du.ac.bd ওয়েব সাইটে গিয়ে ‘সমমান আবেদন’ বা ‘Equivalence Application’ মেনুতে আবেদন করে তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। সমতা নিরূপণের পর প্রাপ্ত ‘Equivalence ID’ ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো তাঁরা একই ওয়েবসাইটে লগইন করে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন।