রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ৭ মার্চ থেকে এ আবেদন শুরু হবে। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা ১৮ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। এই শিক্ষাবর্ষে প্রতি ইউনিটে বাছাই করা ৪৫ হাজার করে তিনটি ইউনিটে মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তবে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
পরীক্ষা ছাড়াই (২০২০ সাল) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মূল্যায়নে পাস করেছেন সবাই। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন। এর মধ্য জিপিএ-৫ (গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ) পেয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন পরীক্ষার্থী, যা মোট পরীক্ষার্থীর ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। ফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত নীতিমালা অনুযায়ী এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার যোগ্যতা হারাবেন জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী। আবার বিভাগ পরিবর্তনে ইউনিট রাখার ফলে ভাগ্য ফিরতে পারে জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীর।
এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ ১১টি বোর্ডের অধীনে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। এদের মধ্যে শুধু বিজ্ঞান বিভাগ থেকেই জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪ জন শিক্ষার্থী। বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার, মানবিক বিভাগ থেকে মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯ হাজার। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০২০ সালের আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৮ জন পরীক্ষার্থী। ফলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন জিপিএ-৫ না পাওয়া কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।
এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৪ হাজার ১৯১টি আসনে তিনটি ইউনিটে পরীক্ষা হবে। ‘এ’ (কলা, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান ও চারুকলা অনুষদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) ইউনিটে আসন ২ হাজার ১৯টি, ‘বি’ (ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট) ইউনিটে ৫৬০টি এবং ‘সি’ (কৃষি ও বিজ্ঞান অনুষদ) ইউনিটে ১ হাজার ৬১২ আসন রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটকে তিনটি আলাদা পালায় ভাগ করা হবে। তিন সপ্তাহজুড়ে তিন দিনে তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
‘এ’ ইউনিটের জন্য এসএসসি ও এইচএসসির যেকোনো একটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৩.০০সহ দুটি মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ-৭.০০ থাকতে হবে। ‘বি’ ইউনিটের জন্য এসএসসি ও এইচএসসির যেকোনো একটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫০সহ দুটি মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ-৭.৫০ থাকতে হবে। ‘সি’ ইউনিটের জন্য এসএসসি ও এইচএসসির যেকোনো একটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫০সহ দুটি মিলিয়ে ন্যূনতম জিপিএ-৮.০০ থাকতে হবে।
বাণিজ্য শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা শুধু ‘বি’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট) আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫০সহ মোট জিপিএ-৭.৫০ থাকতে হবে।
বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা কেবল ‘সি’ ইউনিটে (বিজ্ঞান, প্রকৌশল, কৃষি, জীববিজ্ঞান, ভূবিজ্ঞান, ফিশারিজ ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদ) আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫০সহ মোট জিপিএ-৮.০০ থাকতে হবে।
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ৭-১৮ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক আবেদন চলবে। বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের ২৩ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে। এবার ১০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচটি ভুল উত্তরের জন্য ১ নম্বর কাটা পড়বে। পরীক্ষায় নূন্যতম পাশ নম্বর ৪০।এবার কেবল ২০২০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা কেবল এমসিকিউ প্রশ্ন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এবার থাকবে না লিখিত পরীক্ষা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন না।
২০২০-২১ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ থাকছে। ২০২০ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিকে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক (ইউনিট-A)/বাণিজ্য (ইউনিট-B)/বিজ্ঞান (ইউনিট-C) ৩টি ইউনিটেই যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী যে ইউনিটে আবেদন করুক না কেন সে যে শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে সেই শাখার জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি পরীক্ষার তারিখ এখনো নির্ধারণ করেনি। এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।