একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চলতি বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ১৬ জন শিক্ষার্থী। আর ওই প্রতিষ্ঠানটি হলো নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ। এর আগে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৩৯ জন শিক্ষার্থী একই সঙ্গে মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ পেয়েছিলেন।
গত ৩০ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থানসহ ১৬ শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তি সুযোগ পেয়েছেন। এঁদের মধ্যে ছেলে ১৫ জন ছেলে ও মেয়ে একজন।
বুয়েটে ভর্তি সুযোগ পাওয়া এই কলেজের শিক্ষার্থী ইমন ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, তাঁর স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়ার। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ে তাঁর সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি কলেজের হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করেছেন। তাঁর বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের কিসামত হরকলি গ্রামে। বাবা আলমগীর হোসেন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। এর আগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তবে ভর্তির সুযোগ মেলেনি।
ইমন বলেন, এইচএসসিতে দুই বছর ভালোভাবে পড়াশোনা করলে কাঙ্ক্ষিত স্থানে ভর্তির সুযোগ পাওয়া সম্ভব।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সালে ৪০ জন, ২০২০ সালে ৪০ জন, ২০১৯ সালে ৩৬ জন ও ২০১৮ সালে ৩৮ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পান।
১৬ শিক্ষার্থীর এক সঙ্গে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক বলেন, ‘এটি (সরকারি বিজ্ঞান কলেজ) সৈয়দপুর তথা এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে সুশৃঙ্খল পরিবেশ, পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং কঠোর তদারকি। ফলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রতিবছর আশানুরূপ ফল করছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। এ বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৯ জন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এবার ১৬ শিক্ষার্থী বুয়েটে সুযোগ পেলেন। শিক্ষার্থীদের এই অর্জনে আমরা গর্বিত।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি স্কুল। পরে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজে উন্নীত করা হয়। সে সময় সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয় নামকরণ করা হয়। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটির নাম সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ করা হয়।
সূত্র জানায়, চলতি বছর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) মোট ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। উত্তীর্ণ হয়েছেন ২৬৫ জন। এঁদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৪৯ জন। এর মধ্যে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩৯ জন শিক্ষার্থী পেয়েছেন বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ। আর এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সালে ৪০ জন, ২০২০ সালে ৪০ জন, ২০১৯ সালে ৩৬ জন ও ২০১৮ সালে ৩৮ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পান। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অন্য শিক্ষার্থীরা বুয়েট, চুয়েট, রুয়েট ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গত ১৪ মার্চ সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ পরিদর্শনে আসেন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।