স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটি মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে এই দাবি জানায়।
সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁরা তাঁদের দাবি তুলে ধরে স্লোগান দিতে থাকেন।
মানববন্ধন শেষে সংগঠনের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশ তালিকাভুক্ত কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক কোটির কাছাকাছি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। এখানে বড় রকমের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। এই স্কুলগুলোতে শিক্ষকসহ অন্যান্য পদে প্রায় আট লাখ মানুষ কাজ করছেন। শিক্ষকদের মধ্যে অধিকাংশই নারী। স্কুল থেকে পাওয়া স্বল্প বেতনে তাঁদের সংসার চলে।
এই স্কুলগুলো কখনো কোনো সরকারি অনুদান পায় না, অনুদান পাওয়ার আবেদনও করে না। নিজ অর্থায়নেই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়। দেশের শতভাগ প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে এই স্কুলগুলো ব্যাপক অবদান রাখছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় একদিকে শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না, অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রবল আর্থিক সংকটে পড়েছে। তারা বাড়িভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ মেটাতে পারছে না। অনেকে স্কুল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা অবিলম্বে এসব স্কুল খুলে দেওয়ার দাবি করেন।
বক্তারা বলেন, ইতিমধ্যেই হাফেজি ও কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হয়েছে। ও এবং এ লেভেল পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সব ধরনের যানবাহন চলছে, অফিস-আদালত খুলে গেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে। কাজেই তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দেওয়া হোক।
স্কুল খোলা ও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা এই বিশেষ মহামারি পরিস্থিতিতে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সম্মানজনক আর্থিক বরাদ্দ দেওয়ার দাবি করেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব জি এম জাহাঙ্গীর কবীর, মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী, মুক্তিযোদ্ধা এম এইচ বাদল, হাবিবুর রহমান, ইস্কান্দার আলী হাওলাদারসহ অনেকে।