সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে চুয়েটে শিক্ষক ও কর্মচারীদের মানববন্ধন

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং এ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে পৃথক দুটি মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষক সমিতি ও কর্মচারীদের সংগঠন স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন।

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে চুয়েট শিক্ষক সমিতি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তাঁরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়নের দাবি জানান। দাবি আদায়ে কাজ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে চুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি জি এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হলে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহ হারাবেন। এখানে শিক্ষকেরা পদোন্নতি পান নতুন একটি নিয়োগের মাধ্যমে। ফলে দেখা যাবে, পদোন্নতি পাওয়ার পর বর্তমান শিক্ষকেরাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় পড়বেন। তাই অনতিবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক স্কিমের আওতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুক্ত রাখতে হবে।

স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান বলেন, ‘এটি দেশকে মেধাশূন্য করার একটি প্রচেষ্টা। এ প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। শিক্ষকদের সুযোগ না দিলে দেশ মেধাশূন্য হওয়ার পথে আগাবে। এই স্কিম পরিপূর্ণ সর্বজনীন নয়। এ রকম প্রহসনের স্কিম আমরা মানি না। আমি আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সরকারকে এই আইনের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।’

এর আগে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনের সড়কে বাংলাদেশ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধন করে চুয়েট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক কর্মচারী মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতামুক্ত রাখার পাশাপাশি পদোন্নতি সুবিধা বৃদ্ধি এবং আগামী বাজেটে নবম পে–স্কেল চালুর দাবি জানান।

এ সময় চুয়েট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জামাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা অতি শিগগির এই বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম থেকে মুক্তি চাই। সেই সাথে আগামী বাজেটে সব কর্মচারীর নবম পে–স্কেল গ্রেডে উন্নীত করতে হবে। দাবি না মানা হলে প্রয়োজনে চুয়েটের বাস, হলের ডাইনিং, বিদ্যুৎ, পানি—সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবু এই বৈষম্য আমরা মেনে নেব না।’

গত বছর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়। গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের পর থেকে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার চাকরিতে যাঁরা নতুন যোগ দেবেন, তাঁরা বিদ্যমান ব্যবস্থার মতো আর অবসরোত্তর পেনশন-সুবিধা পাবেন না। তার পরিবর্তে নতুনদের বাধ্যতামূলক সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করা হবে।