ভারতের দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে খালিস্তান আন্দোলনের প্রসঙ্গটি বাদ দেওয়া হচ্ছে। ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গত মঙ্গলবার একটি সভা করেছে। ‘পলিসিস ইন ইন্ডিয়া সিন্স ইনডিপেনডেন্স’ নামে বইতে থাকা ‘খালিস্তান আন্দোলন’ শব্দটি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনার পরে সভায় সিদ্ধান্ত হয় খালিস্তান আন্দোলনের প্রসঙ্গটি বাদ দেওয়া হবে।
শিরোমণি গুরুদুয়ারা প্রবন্ধক কমিটি এনসিইআরটির কাছে একটি চিঠি লিখেছিল। সেখানে তারা উল্লেখ করেছে, দ্বাদশের ক্লাসের বই থেকে ‘খালিস্তান’ শব্দটি বাদ দিতে হবে। অন্যদিকে শিখরা বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে যেভাবে বইতে দেখানো হয়েছিল, সেই অংশটি বাদ দিতে হবে বলেও তারা দাবি জানিয়েছিল। এদিকে গত মাসে ওই কমিটির প্রধান হরজিন্দর সিং ধামি জানিয়েছিলেন, এনসিইআরটি তাদের পাঠ্যবইতে আনন্দপুর সাহিব নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য পেশ করেছে। পাঠ্যবইতে এ ধরনের তথ্য থাকলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে।
কমিটির চিঠি পাওয়ার পরই এনসিইআরটির বিশেষজ্ঞ কমিটি আলোচনায় বসে। এরপরই ওই অংশ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এনসিইআরটি জানিয়েছে, দ্বাদশের ওই বইয়ের পরিবর্তিত অংশ শিগগিরই তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে। এ নিয়ে এনসিইআরটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তৃতীয় প্যারাগ্রাফের শেষ লাইন, সেখানে ‘সেপারেট শিখ নেশন’ শব্দটি বাদ দেওয়া হচ্ছে। পাঞ্জাব সাব হেডিংয়ে এবার উল্লেখ করা হবে, ‘The Resolution was a plea for strengthening federalism in India।’ সেই সঙ্গে the creation of Khalistan এই অংশটিও পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।
পাঠ্যবইয়ের পাঞ্জাব শীর্ষক অধ্যায়ের ওই অংশ লেখা হয়েছিল, ১৯৭৩ সালে আনন্দপুর সাহিব রেজল্যুশন অনুসারে পাঞ্জাব অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হয়েছিল। তবে সেই খালিস্তান–সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে এবার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে এ বছরের শিক্ষাবর্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রম থেকে মোগল যুগ বাদ দিয়েছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) পাঠ্যপুস্তক থেকে মোগল যুগ বাদ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে ষষ্ঠ সেমিস্টারে সিলেবাসে ছিল রাজা রামমোহন রায়, পণ্ডিত রমাবাই, স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, মুহাম্মদ ইকবাল এবং বি আর অম্বেদকরের জীবনী। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে সিলেবাস থেকে বাদ পড়বে ইকবালের জীবনী।
এদিকে ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা, হিন্দুস্থাঁ হামারা’-র লেখক উর্দু কবি মুহাম্মদ ইকবালের জীবনী ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ‘মডার্ন ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল থট’ শিরোনামের অধ্যায়টি বিএ-এর ষষ্ঠ সেমিস্টারে পড়ানো হতো। এর মধ্যেই ছিল প্রয়াত কবির জীবনী এবং সাহিত্য রচনা-সম্পর্কিত ‘ইকবাল: কমিউনিটি’ অধ্যায়টি।