মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে মঙ্গলবার। এ বিষয়ে রোববার ২০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিতে মাউশির সব আঞ্চলিক পরিচালক ও উপপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
নির্দেশনাগুলো হলো যেসব শিক্ষার্থী করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, সশরীর শ্রেণি কার্যক্রমে শুধু তাদেরই অংশ নেওয়া; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথসহ অন্যান্য জায়গায় করোনা মহামারি সম্পর্কে সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা; পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন বা ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা; অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখা; শিক্ষার্থীদের ক্লাসসূচি আগের নির্দেশনা মেনে প্রণয়ন করা; ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশ ও প্রস্থানপথ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা এবং একটি প্রবেশ বা প্রস্থানের পথ থাকলে সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ ও প্রস্থানের পথের ব্যবস্থা করা; প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।
নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছে প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান ও বাসা থেকে আসা–যাওয়া করবে, সে বিষয়ে তাদের অবহিত করা; প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা; সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা; প্রতিষ্ঠানের সব ‘ওয়াশ রুম’ নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা ও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করা; শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কারও প্রবেশ, অবস্থান ও প্রস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করা; শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্যদের সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা; প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা; শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা এবং ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা; খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা; প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা; স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করার ব্যবস্থা করা এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছিল, সেই সময়ও এ ধরনের বেশ কিছু নির্দেশনা মানতে হয়েছিল। নির্দেশনা মেনে ক্লাস চলার মধ্যেই নতুন করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে সরকার; যা সোমবার পর্যন্ত বহাল রয়েছে।
মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ছুটি আর বাড়ছে না। অবশ্য প্রাথমিকের ছুটি ১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোয় এসব বিদ্যালয় খুলবে আগামী ২ মার্চ।