ওয়ার্ল্ডস ইউনিভার্সিটিজ উইথ রিয়েল ইমপ্যাক্ট (ডব্লিউইউআরআই) র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের শীর্ষ ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) সম্প্রতি জায়গা করে নেয়। উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতার জন্য ইউল্যাবের এই অর্জন শুধু ইউল্যাবের জন্য সুনাম বয়ে আনেনি, সুনাম বয়ে এনেছে দেশের জন্য। এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে ইউল্যাব আয়োজন করে অন্য রকম আনন্দোৎসব।
১৫ জুলাই সন্ধ্যা সাতটায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে ইউল্যাব 'সৃজনশীলতায় বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ৫০-এ স্থান পাওয়ায় ইউল্যাবের আনন্দ আয়োজন' শীর্ষক এক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, 'মুজিব বর্ষের প্রাক্কালে আমাদের উচ্চশিক্ষা খাতে একটি নতুন উপহার জাতির জন্য হয়েছে। আন্তর্জাতিক একটি স্বীকৃতি আমাদের দেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মুজিব বর্ষে পেয়েছে। এটা সকলের জন্য গর্বের বিষয়। শিক্ষা পরিবারের জন্য গর্বের বিষয়, বাংলাদেশের মানুষের জন্য গর্বের বিষয়।'
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, 'একটি বিশ্ববিদ্যালয় যখন এগিয়ে যাওয়ার জন্য নানান ধরনের কোর্স, নানা ধরনের পাঠ্যক্রম, উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সংযুক্ত করবে, আমরা সেটাকে যেন স্বাগত জানাই। এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতি, অর্থাৎ, টিচিং লার্নিং এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড লার্নিং আউটকাম সেটাকে আমরা যে বলছি শিক্ষণ ফল, সেটাকে অর্জন করার জন্য যদি নতুন প্রযুক্তি, নতুন পদ্ধতি সংযুক্ত করতে হয়, সেগুলোকে আমাদের স্বাগত জানানো উচিত। এই ক্ষেত্রে ইউল্যাব বেশ উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিয়েছে। এটার মাধ্যমেই এই স্বীকৃতি লাভ হয়েছে।'
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, 'ইউল্যাবের মতো উচ্চমানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেন পিএইচডি ও এমফিল ডিগ্রি প্রোগ্রামের অনুমতি পায়, সে লক্ষ্যে ইউজিসির সঙ্গে কাজ করতে হবে।'
অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'আমরা পৃথিবীতে নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন। সে পরিস্থিতিতে নতুনত্ব নিয়ে, নতুন প্রেরণা নিয়ে, নতুন ইনোভেশন নিয়ে ইউল্যাব হাজির হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। ইউল্যাবের দ্বারা সম্ভব নতুনভাবে চিন্তা করার, ইনোভেশনকে আনার, কোর্স কারিকুলামকে চেঞ্জ করে আমাদের দেশের শিক্ষা কার্যক্রমকে নতুনভাবে নিয়ে আসার।'
এই অর্জন শিক্ষার্থীদের অভিহিত করে ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, 'শিক্ষার্থীরা যদি ভালো না করত, তাহলে ডব্লিউইউআরআই র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তালিকায় ইউল্যাব জায়গা করে নিতে পারত না। তাদের উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতার জন্য এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।'
ইউল্যাবের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) ডিরেক্টর ও মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জুড ইউলিয়াম হেনিলো তাঁর বক্তব্যে ডব্লিউইউআরআই র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের শীর্ষ ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় কীভাবে উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতার জন্য ইউল্যাব স্থান করে নিয়েছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। এই তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)।
ইউল্যাব থিম সংয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউল্যাবের উপাচার্য ড. এইচ এম জহিরুল হক। মাত্র ১৬ বছরের পদার্পণে ইউল্যাব কীভাবে সাফল্যে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, সে বিষয়ে স্মৃতিচারণা করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে যেসব উপাদান দরকার তার সবকিছু ইউল্যাবে রয়েছে। ইউল্যাবে রয়েছে হার্ভার্ড, কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড, কর্নেলসহ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ভালো ভালো শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে ২৭ বিঘা জমির ওপর বিশাল স্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে। রয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কায়সার হক, সলিমুল্লাহ খান, ইমরান রহমানের মতো দেশের স্বনামধন্য শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অর্জনে ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ইউল্যাবের সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেন ইউল্যাব অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহমেদ রাকিব। তিনি বলেন, 'ইউল্যাব থেকে পাস করে নতুন চাকরিতে যোগদান করে অবাক হতে হয় না। ইউল্যাব আমাদের চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত করে দিয়েছিল বলেই আমাদের অ্যালামনাই সুনামের সঙ্গে দেশ ও দেশের বাইরে কাজ করছে।'
জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম; ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মিসেস আমিনা আহমেদ; ইউল্যাবের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তুজা; ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মিলন কুমার ভট্টাচার্য; রেজিস্ট্রার লে. কর্নেল (অব.) ফয়জুল ইসলাম; সব বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা এই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের বিশেষ উপদেষ্টা ও ইউল্যাব স্কুল অব বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ইমরান রহমান।