সারাক্ষণ বাসায় থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের মানসিক অবসাদ দেখা দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ভবিষ্যতের জন্য করণীয় কী, তা নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়ার সঙ্গে।
করোনা মহামারির কারণে পড়াশোনার খুব ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবেও ক্ষতির শিকার হচ্ছে। কারণ, স্কুলে যাতায়াতে এবং বন্ধুদের সঙ্গে গল্প ও খেলাধুলায় শিক্ষার্থীর যে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটত এবং প্রশস্তি আসত, সেটি এখন হচ্ছে না।
সারাক্ষণ বাসায় থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের মানসিক অবসাদ দেখা দিয়েছে। এতে তাদের মানসিক বিকাশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এই অবসাদের কারণে শিশুর কোনো বিষয়ে আগ্রহ বা উৎসাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ছাড়া শিক্ষার যে সামাজিকীকরণ, এর প্রথমটি শিক্ষার্থীরা পরিবার থেকে পায়। আর শিক্ষার সামাজিকীকরণের দ্বিতীয় ধাপটি বিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়। সেটি এখন হচ্ছে না।
এখন কথা হচ্ছে, এই সংকটকাল পার করার ভালো বিকল্প কী। আমি মনে করি, এই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রযুক্তির মাধ্যমে অ্যাপভিত্তিক পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে, যা এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এটি আরও কীভাবে সম্প্রসারণ ও সহজভাবে ব্যবহার করা যায়, সে উপায় বের করতে হবে। শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অ্যাপভিত্তিক পাঠদান করছে। কিন্তু গ্রামের স্কুলগুলো সক্ষমতার অভাবে অ্যাপভিত্তিক পাঠদান করতে পারছে না। অসচ্ছল অভিভাবকদের সবার হাতে স্মার্টফোন না থাকায়ও তাঁদের সন্তানদের ক্লাসে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। আবার এমন আছে, এক ঘরে একাধিক শিক্ষার্থী আছে। এ ক্ষেত্রে সরকার অসচ্ছল অভিভাবকদের সহযোগিতার কথা ভাবতে পারে।
আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিকল্প হতে পারে। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রী খুব বেশি থাকে না। শিক্ষকেরা চাইলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা নিয়ে কোচিং সেন্টারের আদলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যাচে ব্যাচে ক্লাস নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সরকারিভাবে শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা থাকলে তাঁরা উৎসাহ পাবেন।
আবু সাঈদ ভূঁইয়া, প্রধান শিক্ষক, গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, ঢাকা