প্লে–নার্সারি–কেজি ও প্রাক্‌–প্রাথমিকের ক্লাস বন্ধই থাকছে

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও প্রাক্‌–প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীর ক্লাস আপাতত বন্ধই থাকছে।

আজ রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে এ কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে প্রাক্‌–প্রাথমিক শিক্ষা সশরীর চালু করা হবে। এখন প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি থেকে ক্লাস শুরু হবে।

উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এক বছর মেয়াদি প্রাক্‌–প্রাথমিক শিক্ষা আছে। এ ছাড়া ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কিন্ডারগার্টেনগুলোতে প্লে গ্রুপ, নার্সারি ও কেজি নামে আলাদা প্রাক্‌–প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

এর আগে আজ বিকেলে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব পর্যায়ের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান শুরু হবে। তবে শুরুতে কেবল এ বছরের এবং আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। বাকি শ্রেণিগুলোর শিক্ষার্থীদের ক্লাস সপ্তাহে এক দিন করে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরে তা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। এরপর আর ছুটি বাড়ছে না।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, এ বছরের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস হয়তো কিছুদিন পরেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর নবম এবং একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরও প্রতিদিন ক্লাস হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মধ্য অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার একটি পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে আবারও উপাচার্যদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারা চাইলে এর আগেও খুলতে পারবে।

পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার প্রস্তুতি আছে। তারপরও পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে না নেওয়া গেলে তখন সেটা দেখা যাবে।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১২টায় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।