পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশের ক্লাস প্রতিদিন

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণার পর এবার স্কুল–কলেজও খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিল সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রায় দুই মাস আগে ৩০ মার্চ থেকে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। আর প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাস আপাতত বন্ধই থাকছে।


অবশ্য প্রথমেই সব শ্রেণির ক্লাস প্রতিদিন হবে না। প্রথমে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দ্বাদশ, মাধ্যমিক পর্যায়ের দশম ও প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন (সপ্তাহে ছয় দিন) ক্লাস হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাস হবে। এ ছাড়া নবম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে দুই দিন করে ক্লাস হবে। এরপর করোনা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে ধীর ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ক্লাস শুরু হবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে সভার সভাপতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য জানান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ খোলা হবে কি না এবং সেই পরিবেশ-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে কি না, তা পর্যালোচনা করার জন্য আজ শনিবার আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হয়। সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। সেখানেই মূলত এই সিদ্ধান্ত হয়।


এর আগে গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ পর্যালোচনা করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই দিন শিক্ষামন্ত্রী জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর ২৪ মে থেকে। এ অবস্থায় স্কুল-কলেজ কবে খুলবে, সেটি জানার আগ্রহ সংশ্লিষ্টদের।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শতভাগ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজও সম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।


শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আন্তমন্ত্রণালয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান মো. শহীদুল্লাহ, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে।
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে গত বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়। গত উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষাও হয়নি। জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা ওপরের শ্রেণিতে উঠেছে।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানায় সরকার।