করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হয়নি। চলতি বছরও জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেছেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি যেভাবে আছে, তাতে এই দুই পাবলিক পরীক্ষা শেষ করে আগামী নভেম্বরে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব।
তপন কুমার সরকার আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, আগামী মাসে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। এই পরীক্ষা শেষ করে আগামী আগস্টে শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা, যা শেষ হবে অক্টোবরে। এরপর নভেম্বরে জেএসসি পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব। তবে এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। মন্ত্রণালয় যদি বলে পরীক্ষা নিতে তাহলে সেভাবেই ব্যবস্থা করা হবে।
এর আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, এ ধরনের পাবলিক পরীক্ষা নিতে গেলে তিন মাসের মতো প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে। এর মধ্যে জেএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীও অনেক বেশি। সুতরাং এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করে নভেম্বরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়।
গত ১২ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, ‘আমাদের অনেকগুলো লজিস্টিক বিষয় দেখতে হবে। এ বছরের এসএসসি জুন মাসে এবং এইচএসসি আগস্ট মাসে হওয়ার কথা। এইচএসসি আগস্টে হলে আমাদের কাছে এখনো যা মনে হচ্ছে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা হওয়াটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর হবে।’
নতুন শিক্ষাক্রমেও জেএসসি পরীক্ষার কথা নেই, যা ২০২৩ সাল থেকে কার্যকর হবে। আবার গত দুই বছরও এ পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় এক বছরের জন্য এই পরীক্ষা নেওয়া কতটা জরুরি বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, সেই অর্থে খুব যে জরুরি, তা হয়তো নয়। তারপরও পরিস্থিতিটি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
সাধারণত প্রতিবছরের নভেম্বরে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হতো। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। টানা প্রায় ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে গত দুই বছর এ পরীক্ষাগুলো হয়নি। এর মধ্যে ২০২০ সালে পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ওপরের ক্লাসে উত্তীর্ণ করা হয়েছিল। গত বছর অবশ্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে কম বিষয়ে বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়েছিল। এবারও অষ্টম শ্রেণি স্তরের শিক্ষার্থীদের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার পরিবর্তে বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।