করোনার প্রভাব

ঘাটতি নিয়েই ওপরের ক্লাসে উঠছে শিক্ষার্থীরা

  • ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বছরে মোট ক্লাস হওয়ার কথা ১১৯০টি।

  • নবম-দশম শ্রেণিতে বছরে মোট ক্লাস হওয়ার কথা ১২১২টি।

  • প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত।

  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার আগপর্যন্ত গড়ে ৩০ শতাংশের মতো ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়েছিল।

  • টেলিভিশনে ও অনলাইনে ক্লাসের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা খুব একটা কার্যকর হয়নি।

ফাইল ছবি

শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বছরে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১৭৪টি করে ক্লাস করার কথা। শিক্ষাক্রমে বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাসের এমন হিসাব থাকলেও করোনার সংক্রমণের কারণে এ বছর মাত্র তিন ভাগের এক ভাগের মতো ক্লাস হয়েছে। চলতি বছর আর শ্রেণিকক্ষে সরাসরি ক্লাসের সম্ভাবনাও নেই।

এ কারণে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পড়াশোনা না হওয়ায় নির্ধারিত শিখনফল অর্জন করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। টিভি বা বিচ্ছিন্নভাবে অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হলেও তাও খুব কার্যকর হচ্ছে না।

করোনার এমন বাস্তবতায় ডিসেম্বরে শেষ হতে চলছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের চলতি শিক্ষাবর্ষ। অন্যান্য স্তরের শিক্ষাবর্ষও একই পথে চলছে। এর মধ্যে এখন সরাসরি বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই ‘ভিন্ন উপায়ে’ মাধ্যমিক স্তরের মূল্যায়নের পরিকল্পনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। প্রাথমিকেও পরীক্ষায় ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার চিন্তাভাবনা চলছে।

শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, শ্রেণিকক্ষে ক্লাস হয়েছে তিন ভাগের এক ভাগ। ক্লাসের শেখা ক্লাসে না হওয়ায় বড় ক্ষতি। মাধ্যমিকে বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ।

শিক্ষাবিদেরা বলছেন, শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত শিখনফল অর্জন না হলে তা শিক্ষায় বড় ধরনের ঘাটতি হবে। এর প্রভাবে ঝরে পড়া, ফেল করা বৃদ্ধিসহ শিক্ষার্থীদের শিখনের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাঁদের মতে, এ জন্য প্রয়োজনে শিক্ষাবর্ষ বর্ধিত করা বা শিক্ষাবর্ষের নতুন সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে।

করোনা সংক্রমণের কারণে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

শীতে করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। করোনা সংক্রমণের একপর্যায়ে প্রথমে সরকার চলতি শিক্ষাবর্ষ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে প্রয়োজনে মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করলেও সেখান থেকে সরে এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তথ্য বলছে, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে পড়ে প্রায় পৌনে দুই কোটি ছেলেমেয়ে। মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির কিছু বেশি। আর কলেজে মোট শিক্ষার্থী প্রায় অর্ধকোটি। বাকি শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা, মাদ্রাসা, ইংরেজি মাধ্যমসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে।

প্রতিটি শ্রেণিতে যা শেখার কথা, তা শিখিয়েই শিক্ষার্থীদের ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা উচিত। না হলে শিখনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হবে।
ছিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা হয় শিক্ষাক্রমে থাকা নির্দেশনা মোতাবেক। বিদ্যমান শিক্ষাক্রম উদ্দেশ্যভিত্তিক ও শিখনফলভিত্তিক। শিক্ষার্থীদের কী পড়ানো হবে, কেন পড়ানো হবে, কে পড়বে, কারা পড়াবেন ও কীভাবে পড়াবেন, কতটুকু পড়বে এবং পড়ার ফলে কী হবে—সেসবের বিস্তারিত দিকনির্দেশনা থাকে শিক্ষাক্রমে। বিষয়, কাঠামো, নম্বর, ক্লাসের সময় ও সংখ্যাও ঠিক করা থাকে শিক্ষাক্রমে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) করা শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শুধু আবশ্যিক বিষয়গুলোর জন্যই বছরে ৮০৪টি ক্লাস হওয়ার কথা। আর সব বিষয় মিলিয়ে মোট ১ হাজার ১৯০টি ক্লাস হওয়ার কথা। শনিবার থেকে বুধবার প্রতিদিন ছয়টি ক্লাস এবং বৃহস্পতিবার চারটি ক্লাসের কথা রয়েছে শিক্ষাক্রমে। এই স্তরে মোট এক হাজার নম্বরের পরীক্ষা আছে।

আর সাধারণ ধারার শিক্ষায় নবম ও দশম শ্রেণিতে শুধু বাধ্যতামূলক বিষয়েই বছরে ৬৭২টি ক্লাস হওয়ার কথা। আর শাখা বা বিভাগভিত্তিক বিষয়সহ মোট ক্লাস ১ হাজার ২১২টি। এই স্তরে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাসের ক্লাসের কথা। যেখানে প্রতিদিন ছয়টি ক্লাস হওয়ার কথা।

ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দিনের প্রথম ক্লাস (পিরিয়ড) ছাড়া বাকি প্রতিটি ক্লাস ৫০ মিনিটের। একইভাবে প্রাথমিক স্তরেও এ রকমভাবে ক্লাস ও পিরিয়ডের কথা বলা আছে শিক্ষাক্রমে। এসব ক্লাসসহ অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিকশিত করে তোলা হয়।

কিন্তু করোনার বাস্তবতায় এ বছর শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে ক্লাস, পরীক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম হচ্ছে না। মাধ্যমিকের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা, প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িকী পরীক্ষা থেকে শুরু করে জেএসসি ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং সমমানের পরীক্ষাও বাতিল ঘোষণা হয়েছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না নিয়ে জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে, শিক্ষাক্রম অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক স্তরেও দুই বছরের পড়াশোনার মূল্যায়ন হচ্ছে না।

খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার আগপর্যন্ত বছরের প্রথম আড়াই মাসে শ্রেণিকক্ষে মাত্র ৩০ শতাংশের মতো ক্লাস সম্ভব হয়েছিল। এরপর শিক্ষার্থীরা কার্যত ঘরবন্দী হয়ে পড়ে। পরে সরকার গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিকের এবং ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকের রেকর্ড করা ক্লাস সংসদ টেলিভিশনে প্রচার করছে। মাধ্যমিকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৪৪টি ক্লাস প্রচার করা হয়েছে। শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষের প্রতিটি ক্লাস ক্লাস ৫০ মিনিটের হলেও টিভিতে প্রতিটি ক্লাসের সময় ২০ মিনিট। আবার টিভির ক্লাসে সরাসরি মিথস্ক্রিয়া (ইন্টারেকশন) হয় না। শিক্ষকদের প্রশ্নের সুযোগ নেই। এ জন্য এটিকে ‘মন্দের ভালো’ হিসেবে বিবেচনা দেখা হচ্ছে।

কলেজে টিভিতে ক্লাসেরও ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কলেজে অনলাইনে ক্লাস চালু থাকলেও সব জায়গায় হচ্ছে না। ইউজিসির সূত্রমতে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো প্রায় ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনলাইনে ক্লাস করার মতো ডিভাইসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নেই। এ কারণে অনলাইন ক্লাস এ স্তরেও ভালোভাবে চলছে না। এ ছাড়া অনলাইনে শুধু ক্লাস হচ্ছে, পরীক্ষা না হওয়ায় সেশনজট লেগেছে। সব মিলিয়ে বর্তমান বাস্তবতায় শ্রেণিভিত্তিক যেসব বিষয় শেখার কথা ছিল, তা শিখতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতায় টিভির ক্লাস ছাড়া তাঁদের কাছে আর ভালো বিকল্প ছিল না।

পড়াশোনা কেমন চলছে

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার দূর্গাশ্রম উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আদিত্য চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয় তার অভিভাবকের মুঠোফোনের মাধ্যমে। সে প্রথম আলোকে জানায়, স্কুল থেকে তার স্যারেরা কিছু বলেন না। তার টাচ (স্মার্টফোন) মোবাইল ফোন না থাকায় অনলাইন ক্লাসেরও সুবিধাও সে পায় না। এখন দুজনের কাছে প্রাইভেট পড়ে।

আদিত্যর মা রেণু চক্রবর্তী জানান, তাঁর ছেলে বাসায় পড়তেই চায় না। সারা দিন খেলাধুলা করতে চায়। এখন এক তরুণ বাসায় এসে পড়ায়। এ জন্য মাসে ৪০০ টাকা দেন। আরেকজনের কাছে মাসে ৫০০ টাকা (ব্যাচ করে পড়ান) পড়ে। করোনার কারণে সন্তানের পড়াশোনায় অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

এলাকাভেদে পড়াশোনায় বৈষম্যও আছে। খাগড়াছড়ির পানছড়ি বাজার উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী উমিয়া মগ জানায়, ছুটির পর থেকে স্কুল থেকে তাঁর কোনো খোঁজ নেয়নি। আবার তার ভাষায় বড় ফোন (স্মার্টফোন) না থাকায় অনলাইনে ক্লাস হয় কি না, সেটা সে জানেও না। বাড়িতে বিদ্যুৎও নেই। এখন সারা দিন বিভিন্ন কাজ করেই সময় চলে যায়। বাসায় ‘কিছু কিছু’ পড়ে।

খাগড়াছড়ির উমিয়া মগ সুযোগের অভাবে পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকলেও তুলনামূলক এগিয়ে থাকা মাদারীপুরের ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী আমিরাতের পড়াশোনাও যে খুব এটা হচ্ছে না, সেটা সে–ই বলল। প্রথম আলোকে বলছিল, সত্যি কথা বলতে, ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না। স্কুল খোলা থাকলে পড়াশোনার যে চাপ থাকত, সেটা নেই। স্কুলের উদ্যোগে জুম অ্যাপে ক্লাস করানো হলেও নেটওয়ার্কসহ ইন্টারনেটের সমস্যায় ঠিকমতো অনলাইন ক্লাসও করতে পারছে না। এখন বাসায় একজনের কাছে প্রাইভেট পড়ে। এ ছাড়া বাইরে বিজ্ঞানের দুটি বিষয় পড়ে।

রংপুরের বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী জাজিয়া আক্তার বলল, প্রতিদিন তাদের অনলাইনে একটি ক্লাস হয়। কিন্তু সেটিও তার ভালো লাগে না। বন্ধের কারণে এখন গ্রামের বাড়ি রংপুরে তারাগঞ্জে থাকা এই ছাত্রী বলল, ইউটিউবে দেখে পড়াশোনার সহায়তা নেন।

নতুন চিন্তা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবির সূত্রমতে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক স্তরে বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়া ‘ভিন্ন উপায়ে’ মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য নভেম্বর থেকে ৩০ কর্মদিবসের একটি পাঠ্যসূচি তৈরি করেছে এনসিটিবি।

পুনর্বিন্যাস করা এই পাঠ্যসূচি প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাক্রমে উল্লেখ করা শিখনফলের ফলের ভিত্তিতে সংক্ষিপ্তভাবে এই পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। বিষয়গুলো এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে একেবারে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পাঠ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। আবার যে বিষয়গুলো ওপরের শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ আছে, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা হলো এই পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ডিসেম্বরে অ্যাসাইনমেন্ট বা অন্য কোনোভাবে মূল্যায়ন করে ওপরের শ্রেণিতে ওঠানো। তবে পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

প্রাথমিক স্তরেও পরীক্ষা বা মূল্যায়ন ছাড়াই এ বছর উত্তীর্ণ করার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব আকরাম-আল-হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, স্কুল না খুললে তো আর পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

বিশেষজ্ঞ মত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি শ্রেণিতে যা শেখার কথা, তা শিখিয়েই শিক্ষার্থীদের ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা উচিত। না হলে শিখনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হবে। না শিখে ওপরের শ্রেণিতে উঠলে পরে অনেকের ঝরে পড়া ও ফেল করার প্রবণতা বাড়বে। ‘অটো প্রমোশন’ হলে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যে শ্রেণিতে যতটুকু শেখার কথা, তা হবে না।

যেমন একজন শিক্ষার্থী হয়তো প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণি যোগ-বিয়োগ শেখানোর কথা, কিন্তু সে যদি যোগ-বিয়োগ না শিখে ওপরের শ্রেণিতে ওঠে, তাহলে পরবর্তী শ্রেণিতে গিয়ে গুণ বা ভাগ শিখবে কীভাবে?

এই শিক্ষাবিদের পরামর্শ, উচ্চমাধ্যমিকের মতো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাবর্ষও জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের পরিবর্তে জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত করা দরকার।

এতে আবহাওয়াজনিত সুবিধায় ক্লাসে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। আর এ কাজ আগামী জুলাই থেকে শুরু করলে চলতি বছরের ক্ষতিও পুষিয়ে সম্ভব।