শিক্ষকতা
শিক্ষকতা

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন: যে দুই কারণে সাড়ে ৮ লাখ প্রার্থী ফেল

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ১৮তম নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার যে ফল প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গেছে বিপুল পরিমাণ প্রার্থী পাস করতে পারেননি। এতে দেখা গেছে, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ৮ লাখ ৬০ হাজারের বেশি প্রার্থী উত্তীর্ণ হতে পারেননি। কেন এই বিপুল পরিমাণ প্রার্থী উত্তীর্ণ হতে পারেননি, জানতে চাইলে এনটিআরসিএর একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, দুটি কারণে এমনটি হয়েছে। তবে আগের থেকে অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ১৮ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ প্রার্থী। পাস করেছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন। তাই দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষায় অংশ নিলেও ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৫২ জন পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি।

এনটিআরসিএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, অনেকে আছেন এই এনটিআরসিএর চাকরিতে আবেদন করে রাখেন। সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা ঠিকমতো রাখেন না। আবার পড়াশোনাতেও নিয়মিত নন। ওই কর্মকর্তা বলেন, পাস নম্বর ৪০। কেউ যদি সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা রাখেন আর নিয়মিত পড়েন, তাহলেই তো প্রিলিমিনারিতে পাস করার কথা। পড়াশোনা নিয়মিত না করা আর সিলেবাসের ধারণা না থাকাই ফেল করার একটি বড় কারণ। প্রতিবছরেই এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

তবে অবস্থার উন্নতি হয়েছে দাবি করে এনটিআরসিএর সচিব ওবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্বিক পাসের হার ছিল ২৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এবারে গড় পাসের হার ৩৫ দশমিক ৮০। তাহলে তো দেখা যাচ্ছে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এবারে পাঁচ লাখের মতো প্রার্থী পাস করেছেন। দুই ক্যাটাগরিতে মোট উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৩৬ জন। পাসের নম্বর কম। মাত্র ৪০ পেলেই পাস। সিলেবাস আর নিয়মিত পড়াশোনা করলে এই হার আরও বাড়ত এবারে বলে স্বীকার করেন ওবায়দুর রহমান।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ ১৫ মে ১৮তম নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। এতে উত্তীর্ণ হয় ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন প্রার্থী। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা স্কুল-২ পর্যায়ে ২৯ হাজার ৫১৬ জন, স্কুল পর্যায়ে ২ লাখ ২১ হাজার ৬৫২ জন এবং কলেজ পর্যায়ে ২ লাখ ২৮ হাজার ৮১৩ জনসহ সর্বমোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্বিক পাসের গড় হার ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ।

গত ১৫ মার্চ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের স্কুল/সমপর্যায় ও স্কুল পর্যায়-২–এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেশের ৮টি বিভাগের ২৪ জেলা শহরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। এতে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২৩ হাজার ৯৮৫ জন। এতে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৩৬ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। পরে উত্তীর্ণ ১ লাখ ৪ হাজার ৮২৫ প্রার্থী ৫ ও ৬ মে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন।