সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। আইনি জটিলতা থাকায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে নাকি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে, তা নির্ভর করছে আদালতের শুনানির ওপর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছিলেন চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগে তদন্ত কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে। তদন্ত কমিটিতে ডিবি ও এসবির প্রতিনিধি ও আমাদের প্রতিনিধি ছিলেন। যেসব জেলায় এ নিয়োগ নিয়ে মামলা হয়েছে, সেসব জেলা অর্থাৎ মাদারীপুর ও রাজবাড়ী জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আদালতে আমাদের লিগ্যাল অ্যাডভাইজারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টি আদালতে উঠবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দেখে সিদ্ধান্ত দেবেন। আদালত যদি বলেন নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে, তাহলে আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করব। আর আদালত যদি বলেন ফল প্রকাশ করতে, তাহলে ফল প্রকাশ করব। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে আদালতের শুনানির ওপর। আগে থেকে মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই।’
কবে নাগাদ শুনানি হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এত দিনে শুনানি হয়ে যেত। যেহেতু বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ, তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আদালতে শুনানি হবে। দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত পাব।’
গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়।
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ মার্চ এই দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষার ফল গত ২১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের (৩টি পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলা) লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল পরের দিন প্রকাশ করা হয়।
এদিকে ‘মাদারীপুরে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ঢাকায় সমাধান: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (তৃতীয় ধাপ)’ শিরোনামে গত ২৫ এপ্রিল একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রত্যাশী ১৬ জন প্রার্থী একটি রিট করেছিলেন।