চাকরিতে আবেদনের বয়স বৃদ্ধি ও আবেদন ফি কমানোর দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরা। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। নিউমার্কেট মোড়ে ১৮ মার্চ শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার প্রতিবাদও জানানো হয় মানববন্ধনে।
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাকরিপ্রার্থীরা ১০ বছর ধরে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি। সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সর্বশেষ ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীতকরণ করা হয়, যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থী মো. শরিফুল হাসান বলেন, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ–এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর ও আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। দক্ষিণ–এশিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থী মোহাম্মদ রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাঁদের বয়স শেষ হয়েছিল, তাঁদের ব্যাকডেট দিয়ে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে করোনাকালে যাঁদের বয়স ২৭, ২৮ ও ২৯ বছর ছিল। সেশনজট, করোনাসহ নানাবিধ কারণে যাঁরা বয়সসীমা হারিয়ে আজ চাকরিতে আবেদন করতে পারছেন না, রাষ্ট্র কীভাবে ভুক্তভোগী এসব শিক্ষার্থীর ক্ষতিপূরণ করবে বয়সসীমা বৃদ্ধি করা ছাড়া?
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাকরির আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে (১ম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, ২য় শ্রেণিতে ১৫০, ৩য় শ্রেণিতে ১০০, ৪র্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা)। প্রয়োজনে সরকারকে ভর্তুকির উদ্যোগ নিতে হবে। একই তারিখে একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।
চাকরিপ্রার্থী জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে ২০০ টাকা দিয়ে আবেদন করে যদি প্রথম শ্রেণির সব পদে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা দিতে পারি, তাহলে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোয় কেন পারব না।’ প্রথম শ্রেণির একটা পদে আবেদন ফি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা নেওয়া অযৌক্তিক। বেকারদের আয়ের উৎস নেই। তাই আবেদন ফি দ্রুত কমানো উচিত।