সৌরশক্তি খাতে চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে

গবেষণা সংস্থা ব্লুমবার্গএনইএফ-এ ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে জ্বালানির সবচেয়ে কম দামি উৎস হতে যাচ্ছে সৌরশক্তি। বাংলাদেশে এখন সৌরশক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে। তাই ভবিষ্যতে সবুজ জ্বালানি খাতে কয়েক হাজার নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত বছর এক প্রতিবেদনে বলেছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৩ হাজার ৮০০ চাকরি তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশে এক দশক আগে সৌরশক্তির উৎস বলতে মূলত ছিল সোলার হোম সিস্টেম, যা কম দক্ষ কর্মীরাই স্থাপন করতে পারতেন। এগুলো সাধারণত ভবনের ছাদে স্থাপন করা হয়। তবে বর্তমানে বড় আকারের সোলার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ১০টি বড় আকারের (ভূমিতে স্থাপিত) সোলার প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সৌরশক্তি থেকে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিভিন্ন প্রকল্প ইতিমধ্যে অনুমোদন পেয়েছে বা অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। তাই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মীদের চাহিদা বাড়ছে। আল-মোস্তফা গ্রুপের সোলার প্রকল্পে ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত প্রকৌশলী এস এম ইমরান হাসান থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে জানান, আগে তাঁদের চাকরি খুঁজতে হতো। আর এখন বিভিন্ন কোম্পানি তাঁদের খুঁজে নিচ্ছে।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সোলার এনার্জি কোম্পানি জুলস পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুহার এল খান জানান, তরুণ কর্মীরা যেন প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ করছেন নিয়োগদাতারা। তিনি বলেন, ‘আমরা সদ্য পাস করা গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি, যেন প্রকৌশল ও কমার্স বিষয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা ক্যারিয়ার গড়তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের কথা বিবেচনা করতে পারে।’

নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি কোম্পানি এসওএলশেয়ার-এ প্রোডাকশন সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছেন ২৪ বছর বয়সী ফারজানা আক্তার ইশা। তাঁর দলের সবাই নারী। ইশা বলেন, সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে পারলে নারীরা যে সৌর খাতে ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটা তাঁরা প্রমাণ করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিসিস গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশে যদি শিল্প খাত, বাণিজ্যিক ভবন ও অন্যান্য স্থাপনার ছাদে দুই হাজার মেগাওয়াট সোলার প্যানেল বসানো যায়, তাহলে সরকার বছরে পাঁচ হাজার ২৩৬ কোটি থেকে ১০ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবে। বর্তমানে এসব স্থাপনার ছাদে বসানো সৌর প্যানেল থেকে ১৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।